ঢাকায় ৩ অস্ত্র কারবারি গ্রেফতার করেছে ডিবি। ছবি : বাংলাবার্তা
রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যান্ড ও যাত্রাবাড়ী থানার কাজীরগাঁও এলাকায় শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে দুই অস্ত্র বিক্রেতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবি বলছে, দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে অস্ত্র এনে তারা বিভিন্ন নির্বাচনী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতেন। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রতিটি টিম নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনাল টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় অস্ত্র বিক্রেতারা অবস্থান করছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে দুই স্থানে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আলমগীর হোসেন (৩৮), সৈয়দ মিলন (৪০) ও শেখ জিয়াউর রহমান জিয়া (৪২)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, তারা লালমনিরহাটের সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে শেখ জিয়াউর রহমান জিয়ার মাধ্যমে অস্ত্র সরবরাহ করতেন। এ জিয়া মিডিয়া ম্যানসহ কাজ করছেন।
হারুন বলেন, অস্ত্র বিক্রেতারা লালমনিরহাটের সীমান্ত থেকে অস্ত্র এনে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে দিতেন। তারা এসব অস্ত্র ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতেন। নির্বাচনে প্রতিপক্ষের প্রার্থীকে ভয় দেখানো ও সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হতো। এমনকি তারা প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য হুমকি দিতেন। জিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে, আর কতগুলো অস্ত্র এভাবে কার কার কাছে বিক্রি করা হয়েছে।
গ্রেফতার অস্ত্র বিক্রেতাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে মিলন এক সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। ছাত্রলীগ করলেও তার নামে নয়টি মামলা রয়েছে। একাধিকবার জেল খেটেছেন। সুতরাং আমাদের চোখে তিনি একজন সন্ত্রাসী। ছাত্রলীগ করলেও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তারা কোন কোন প্রার্থীকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছেন সেটি আমরা তদন্তের মাধ্যমে বের করবো।
নির্বাচনে তাদের মাধ্যমে কতগুলো অস্ত্র এসেছে জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, আলমগীর ও মিলন নামে দুই সন্ত্রাসী লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্র আনতেন। এরপর জিয়ার কাছে বুঝিয়ে দিতেন। এ জিয়া বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অস্ত্র পরে বিক্রি করতেন। পাশাপাশি এসব অস্ত্র ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন প্রার্থীদের পক্ষ নিয়ে প্রতিপক্ষকে হুমকি দিতেন। তবে কতটি অস্ত্র বিক্রি হয়েছে সেটি আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।
থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে প্রস্তুতি ও নাশকতার হুমকি আছে কি জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, ডিএমপির পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি কি করা যাবে, কি কি করা যাবে না। আমরা খোঁজ-খবর রাখছি কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি আমাদের পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য কাজ করছে।
একদিকে বছর শেষে নতুন বছর আসছে। অন্যদিকে নির্বাচন সামনে সবকিছু মিলিয়ে আমাদের পর্যাপ্ত ফোর্স মাঠে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাবার্তা/এমপি