তাপস নূর তাপস। ছবি : সংগৃহীত
ঢাকাকে তার পূর্ণ বৈশিষ্ট্যে, পূর্ণ চরিত্রে ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদেরকে ঐতিহ্যকে ধারণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস নূর তাপস।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নেতার মাজার সংলগ্ন এলাকায় সংস্কার পরবর্তী ঐতিহাসিক 'ঢাকা ফটক (গেট)' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ মন্তব্য করেন।
মেয়র বলেন, "আমরা সারা বিশ্বের অনেক বড় বড় দেশ ঘুরি। অনেক কিছুই আমরা দেখি। আমরা যদি দুবাই, সিঙ্গাপুরের কথা বলি, তাহলে আপনারা দেখবেন অনেক বড় বড় অট্টালিকা, বড় বড় সড়ক, বড় বড় স্থাপনা। কিন্তু তার সবই নতুন। তারা হয়তো সাগরকে ভরাট করে নির্মাণ করছে। এরকম তারা অনেক কিছুই করতে পারবে। কিন্তু ৪০০ বছরের পুরনো ঢাকা ফটক সেসব এলাকায় পাওয়া যাবে না। এটাই হলো আমাদের ঐতিহ্যের জায়গা, আমাদের গর্বের জায়গা। সুতরাং ঢাকাকে যদি তার পূর্ণ বৈশিষ্ট্যে, পূর্ণ চরিত্রে ফিরিয়ে আনতে হয় তাহলে আমাদেরকে ঐতিহ্যকে ধারণ করতে হবে।"
এই সংস্কার কাজের মাধ্যমে দু'টো বিষয়কে পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, "আমার প্রথম সন্তান যেদিন হয়েছিল, সেদিন যে রকম আনন্দিত হয়েছিলাম আমি আজকে সে রকম আনন্দ বোধ করছি। আজকে আমরা একটি ইতিহাসকে পুনরুজ্জীবিত করেছি, সে রকম একটি আবেগ-উপলব্দি আমার মধ্যে কাজ করছে। ছোটবেলায় যখন আমরা গুলিস্তান দিয়ে যেতাম তখন এই কামানের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। অনেকে দেখতাম সেই কামানের উপর খেলাধুলা করছে। এটা হারিয়ে গিয়েছিল। এই কামান দিয়ে মীর জুমলা আসাম আক্রমণ করেছিলেন এবং আসাম বিজয় করেছিলেন। সেই কামানটি এখন ঢাকা ফটক প্রাঙণে আমরা নিয়ে এসেছি। সুতরাং আমরা দুটি বিষয়কে পুনরুজ্জীবিত করেছি। একটি হলো ঢাকা ফটক, আরেকটি হলো আসাম অভিযানের শেষ নিদর্শন এই কামান।"
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ সময় লালকুঠি সংস্কার করা হচ্ছে এবং এ বছরের মধ্যে তা সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানান। এছাড়াও তিনি রুপলাল হাউস, বড় কাটরা ইত্যাদি ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো সংস্কার ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও ঢাকা জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান এবং সেগুলো হস্তান্তরে সকলের ভূমিকা কামনা করেন।
এ সময় তিনি ঢাকা ফটকসহ এ সকল ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোতে কোন ধরনের ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন না লাগানোর জন্য সকলকে অনুরোধ করেন এবং লাগানো হলে জরিমানা করা হবে বলেও জানান।
৮২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় করে ঐতিহাসিক ঢাকা ফটক সংস্কার করা হয়েছে। মেসার্স আহনাফ ট্রেডিংস এই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে। এর মাধ্যমে ঢাকা ফটক তথা মীর জুমলার ফটককে পুরনো অবয়বে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
সংস্কার কাজে চুন, সুপারির কস, খয়ের, চিটাগুড় ও ইটের গুড়া এবং ফ্লোরের জন্য মধ্যপাড়া গ্রানাইট পাথরকুচি ব্যবহার করা হয়েছে।
বাংলাবার্তা/এআর