পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সার্বিক অগ্রগতিতে যুক্তরাজ্য খুশি এবং তারা আমাদের সাথে সম্পর্ক সদৃঢ় রাখার অঙ্গীকার করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৪ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে মন্ত্রী এ কথা জানান ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন আরও গভীরতর করার উদ্দেশ্যে তারা সফরে এসেছেন। বাংলাদেশের সংসদের সাথে ইউকের সংসদের সম্পর্ক আরও বাড়ানো যায়, সেটাও তাদের এই সফরে আরেকটি উদ্দেশ্য। তারা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তারা বলেছেন ১০ বছর আগে যখন ঢাকা এসেছিলাম তখন ট্র্যাফিক জ্যাম পোহাতে হয়েছিল, আজ বিমানবন্দর থেকে খুব সহজেই এখানে চলে আসতে পেরেছি। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রযাত্রার কারণেই সম্ভব হয়েছে।
তিনি এ সময় উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সাথে ইউকের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। দেশটি বাংলাদেশের একটি বড় উন্নয়ন অংশীদার। ইউকের আমাদের দেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যাংকিংখাতে বিনিয়োগ রয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশে ইউকে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কৃষি খাতে এবং আইসিটি খাতে বিনিয়োগ করার যে সুযোগ রয়েছে এই বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এই দুটো খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার সামর্থ্য রাখে, এবং অনেকের মধ্যে বিনিয়োগের আগ্রহও তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে আমাদের কৃষি খাতে প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে যান্ত্রিকীকরণে। ১৫ বছর আগে হালের বলদ দিয়ে চাষাবাদ করা হতো, এখন হয় না, হঠাৎ কদাচিৎ দেখা যায়। আগে ধান মাড়াই কিভাবে হতো এটি এখন আমরা ছবিতে বা ভিডিওতে দেখি। এখন ধান মাড়াই হয় আধুনিক পদ্ধতিতে।
রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে বৈঠকে জানানো হয়েছে প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র স্থায়ী সমাধান। তারাও আমাদের সাথে একমত পোষণ করেছে। কিছুদিন আগে নেমস সামিটে মায়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাথে এ বিষয়ে যে আলোচনা হয়েছে হয়েছিল তাও আজকে বৈঠকে আমি আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। রাখাইন এখন যে উত্তেজনা করে পরিস্থিতি, এটি কত কিছুদিন ধরেই চলছে। আমাদের সীমান্ত রক্ষীরা অনেক আগে থেকেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে সব সময়ই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছি। আমরা মনে করি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে যদি মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করা হয় তাহলে তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাধ্য হবে।
নতুন করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিপুল সংখক রোহিঙ্গার কারণে ইতিমধ্যেই আমরা ভারাক্রান্ত। প্রতিবছর ৩৫ হাজার করে রোহিঙ্গা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। মানবাধিকার কারণে তখন আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলাম। আমরা মনে করি মিয়ানমারের পরিস্থিতি উন্নয়নের মাধ্যমে এই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
বাংলাবার্তা/এআর