ছবি : বাংলাবার্তা
আর ৩ দিন পর শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। বিশ্ব তাবলীগ জামাতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় মহাসমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা। এবার ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি চলছে বরাবরের ন্যায় স্বেচ্ছাশ্রমে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) ফজরের নামাজের পর আম বয়ানের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমা। এটি বিশ্ব মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় মহাসম্মেলন।
আগামী ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার আলমি শুরার পর্ব। এরপর ৪ দিন বিরতি দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে সা’দ পন্থীদের ইজতেমা। ১১ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে উভয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা।
ঈমান, ইখলাস ও আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়ার উপকারিতা, উত্তম চরিত্র গ্রহণ ও মন্দ চরিত্র থেকে বিরত থাকাসহ প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বাংলা ও উর্দু ভাষায় বয়ান হবে। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে উর্দু বয়ানের সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেক ছাউনিতে মূল বয়ান অনুবাদ করার জন্য একজন করে দোভাষীর ব্যবস্থা রাখা হয় ইজতেমায়। চাইনিজ, জাপান, কুরিয়ান, ইংরেজি, আরবি, ফার্সি, তুর্কি, মালাই ভাষাসহ প্রায় ২২টি ভাষায় এ বয়ানের অনুবাদ করা হয়।
টঙ্গীর ইজতেমার মাঠে ১৬০ একর জমি বিস্তৃত ময়দানের উত্তর পশ্চিমে তৈরি হচ্ছে বয়ানের মঞ্চ। একই সাথে পশ্চিমপ্রান্তে কামাড়পাড়া বিজ্র সংলগ্ন বিদেশি মেহমানদের থাকার ঘর। আগত মুসল্লিদের নদী পারাপারের জন্য থাকবে সেনাবাহিনী কর্তৃক ভাসমান সেতু।
তীব্র শীত উপেক্ষা করে ইজতেমা উপলক্ষে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা মুসল্লিরা স্বেচ্ছাশ্রমে প্রস্তুত করছেন ইজতেমা ময়দান। স্বেচ্ছাশ্রমে তারা ময়দানে মাটি কাটা, সামিয়ানা সেলাই করা, চট বাধাই, ময়লা আর্বজনা পরিস্কার, ড্রেন পরিস্কারসহ বিভিন্ন কাজ করেছেন। একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় স্বাচ্ছন্দে শ্রম দিয়েছেন। স্বেচ্ছা শ্রমে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠের কাজ প্রায় সম্পন্ন।
আরও পড়ুন : কাতার কুরআন প্রতিযোগিতায় হাফেজ মুশফিকের প্রথম স্থান অর্জন
তাবলীগের সাথী মাদারাসা আবু হুরাইরা (রা.)-এর মুহতামিম মুফতি জুনাইদ বলেন, দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ সমস্ত নবী ও রাসুলগণ করেছেন। মূলত দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ নবীদের। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর আর কোনো নবী আসবেন না। তাই এ উম্মতের উপর দায়িত্ব হচ্ছে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করা। তাই তো এ উম্মতের দাম আকাশচুম্বী। মহান আল্লাহর রাস্তায় নিজের অর্থ, শ্রম ও সময় দেওয়া অত্যন্ত সাওয়াবের কাজ।
তিনি আরও বলেন, দেশ বিদেশের মুসুল্লিরা আসবে তাদের জন্য শ্রম দিতে পারা পরম সৌভাগ্যের বিষয়। এখানে তারা ইবাদত-বন্দেগী করবেন।
উল্লেখ্য, প্রায় এক শতাব্দি পূর্বে মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভি (রাহ.)-এর মাধ্যমে প্রচলিত দাওয়াত তাবলীগের সঙ্গে পরিচয় হয় মুসলমানদের। মহান এ জামাতের মেহনতের মাধ্যমে বহু পথভোলা, অন্ধকার পথের যাত্রী আলোর পথে ফিরে আসে। দাওয়াত ও তাবলীগ মুসলিম ও অমুসলিম সব দেশে সমান তালে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ