সাধন চন্দ্র মজুমদার। ছবি: বাংলাবার্তা
৩ দিনব্যাপী সেফ ফুড কার্নিভাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। জুমার নামাজের আগে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে মুসল্লীদের সচেতন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অভ ফেইমে সেইফ ফুড কার্নিভালের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে একথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, মানসম্মত খাবার পেতে হলে একটু খরচ বেশি হয়। প্রয়োজনে অল্প খাবো কিন্তু মানসম্মত খাবার খাবো এই মানসিকতা তৈরি করতে হবে। সস্তা পেলেই বেশি খাওয়ার প্রবণতা থাকে।
তিনি বলেন, একসময় আমাদের দেশ থেকে প্রচুর চিংড়ি রফতানি হতো। কিন্তু ক্ষতিকর জেলি মেশানোর পর থেকে রফতানি কমে যেতে শুরু করে। বিদেশে মানসম্মত পণ্যের চাহিদা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশে রফতানি করতে হলে মানসম্মত পণ্য নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশী ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করে রফতানী যোগ্য পণ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে একসময় খাদ্যের অভাব ছিল, মঙ্গাও ছিল। আমরা এখন সেখানে নেই। দানাদার খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। এখন আমরা পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য যাতে ভোক্তা পায় সেটা নিয়ে কাজ করছি।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, নিরাপদ খাদ্যের জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা থেকে যদি নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া যায় তাহলে বিষয়টি সহজ হবে। ইতোমধ্যে নিরাপদ খাদ্যবিষয়টি পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত তা যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত থাকলে আর তা কলেজ পর্যায়ে প্রয়োজন হবে না। সমাজের যারা অনুপ্রেরণাদায়ী মানুষ আছে তাদের এখানে কাজ করতে হবে।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো: আব্দুল কাইউম সরকার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ইসমাইল হোসেন।
পরে খাদ্যমন্ত্রী নিরাপদ খাদ্য পণ্যের বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও সমৃদ্ধি চাই, নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নাই’’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস, ২০২৪ পালিত হচ্ছে। জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস, ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে প্রথমবারের মতো শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপি ‘সেইফ ফুড কার্নিভালে বিভিন্ন খাদ্য প্রতিষ্ঠানের খাবার উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানিতে কী ধরনের নিরাপদতা বজায় রাখে তা জনসাধারণকে জানাতে এবং প্রতিষ্ঠাগেুলোর মধ্যে আন্তঃসমন্বয় বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত টানা তিনদিন এ ফুড কার্নিভাল সবার জন্য উন্মুক্ত। কার্নিভালে প্রবেশের জন্য দর্শনার্থীদের কোনো বাড়তি প্রবেশ মূল্য গুণতে হবে না।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের খাবার উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও রফতানি সংক্রান্ত খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানাতে এবং খাদ্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আন্তঃসমন্বয় বাড়াতে এ কার্নিভাল আয়োজন করছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
কার্নিভালে চট্টগ্রামের মেজবান, বগুড়ার দই, রাজশাহীর কালাই রুটি, কুমিল্লার মাতৃভাণ্ডার, কক্সবাজারের শালিক, মুক্তাগাছার মান্ডা থেকে শুরু করে নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক খাবার থাকবে। এসবের পাশাপাশি থাকবে পাঁচ তারকা হোটেলের নামিদামি সব খাবারের আয়োজন। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, প্যান প্যাসিফিক, হলিডে ইন, ঢাকা রেজেন্সি, ক্রাউন প্লাজা ও হোটেল আমারির মতো পাঁচ তারকা হোটেলের স্পেশাল মেনু কার্নিভালে প্রদর্শিত হবে।
বাংলাবার্তা/এআর