রেলমন্ত্রী। ছবি : সংগৃহীত
জমি দখল করে মসজিদ বানালে নামাজ হয় না বলে মন্তব্য করে রেলপথ মন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেছেন, যারা রেলের জমি দখল করে আছেন তারাও জানেন কাজটা অন্যায়। তাদের বিবেকের দংশনে দংশিত হওয়া উচিত।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
রেলপথ মন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেন, আমরা একটা অন্যায় কাজ করে যাচ্ছি। দখল করে মসজিদ বানালে সে মসজিদে নামাজ হয় না। কিন্তু রেলের জমি দখল করে যে বসবাস করে সে কি খুব শান্তিতে বসবাস করতেছে, আমার মনে হয় না। এক ধরনের দুর্বৃত্ত আছে তারা এ কাজ করতেছে।
রেলমন্ত্রী বলেন, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ২৮৫৯ জনবলের বিপরীতে বর্তমানে ৮৬০ জন কর্মরত রয়েছেন। ২৮০০ জনের কাজ তো ৮০০ জন করতে পারে না। একটা কারখানা সম্পূর্ণভাবে সচল রাখা সম্ভব না। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের যে যন্ত্রপাতি আছে আরও কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে লোকবল নিয়োগ দিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে রেলকে উন্নতির পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। এটা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও চান।
তিনি আরও বলেন, সৈয়দপুর রেলওয়ে সেতু কারখানায় অতীতে রেল সেতুর গার্ডার তৈরি হতো। এছাড়াও পাহাড়তলীতে হতো। এখন অল্প কিছু হয় বাকিটা আমদানী করতে হয় এই দক্ষ জনশক্তির অভাবে। আমরা চাচ্ছি রেলকে স্বাবলম্বী করার জন্য। আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে রেলকে স্বাবলম্বী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আর আমাদের মানুষগুলোকে ভালো হতে হবে। মানুষ ভালো না হলে চেষ্টা করেও কিছু করা যায় না। প্রত্যেক জায়গা থেকে চুরিচামারি বন্ধ করতে হবে। চুরিচামারি যারা করে তাদেরকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।
রেলমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে রেল অনেক এগিয়ে গেলেও আমরা সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারছি না। কারণ আমাদের দক্ষ জনশক্তির অভাব। আর সবচেয়ে বড় কথা আমাদের আন্তরিকতার অভাবও রয়েছে। বিএনপির সময় গোল্ডেন হ্যান্ডশেক করে আমাদের দক্ষ জনশক্তিকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রত্যেকটা কারখানার যা ক্যাপাসিটি আছে আমরা ইচ্ছে করলে অনেক কিছু করতে পারি। কিন্তু সমস্যাটা হলো আমাদের লোকবলের অভাব।
এর আগে মন্ত্রী কারখানার ২৯টি শপ (উপ-কারখানা) ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন। বর্তমান সরকারের রেলপথ মন্ত্রী হিসেবে এটিই তার প্রথম রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শন। তিনি রেলওয়ে কারখানায় এসে পৌঁছালে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান, জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ ও পুলিশ সুপার গোলাম সবুর। এরপর মন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে কারখানায় স্থাপিত অদম্য স্বাধীনতায় শহীদদের স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, মহাপরিচালক (ডিজি) কামরুল হাসান, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার, প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (সিএমই, পশ্চিম) মুহম্মদ কুদরত-ই খুদা, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও শ্রমিক লীগ নেতা মোখছেদুল মোমিন প্রমুখ।