জুনাইদ আহমেদ পলক। ছবি : সংগৃহীত
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ‘হার পাওয়ার’ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের নারীদের প্রযুক্তি শিক্ষায় দক্ষ হয়ে উঠার পাশাপশি আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সাতক্ষীরায় হার পাওয়ার প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত কলারোয়া, তালা ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নারী আইটি সেবাদাতা ক্যাটাগরীর ২৪০ জন প্রশিক্ষণার্থীকে ল্যাপটপ প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
‘আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি একটি শিক্ষিত জাতি দেব’ নেপোলিয়নের উক্তি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নেপোলিয়নের এই উক্তির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় নারীদের ৬০% কোটা নির্ধারণের বঙ্গবন্ধুকন্যার যুগান্তকারী একটা সিদ্ধান্ত আমাদের সমাজে নারীদের সম্মান ও অধিকার প্রতিষ্ঠার চিত্র বদলে দিয়েছে। যে সমাজে নারীদেরকে বোঝা মনে করা হতো, সে সমাজে নারীদের সম্মান প্রতিষ্ঠা হয়েছে, যৌতুক ব্যাধি থেকে নারী সমাজ মুক্ত হয়েছে এবং একইসাথে নারীদের সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও অর্থনৈতিক অধিকারও প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক্ট সজীব ওয়াজেদ জয় ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্প ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল সেবা মানুষের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারেও একজন পুরুষের পাশাপাশি একজন নারী উদ্যোক্তাকে সুযোগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
বর্তমানে ৯০০০ ডিজিটাল সার্ভিস ডেলিভারি সেন্টারে ৫০ শতাংশ নারী ডিজিটাল উদ্যোক্তারা সেবা প্রদান করছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার এই দুইটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ও কর্মসংস্থানের জন্য ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হিসেবে ইতিহাসে লেখা থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, সাতক্ষীরার মানুষ এখন শুধুমাত্র মৎস্য সম্পদ রপ্তানি করেই বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে না, হার পাওয়ার প্রকল্পে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদের বোনেরা নিজেদের মেধা ব্যবহার করেও এখন বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। আমরা বিশ্বাস করি, উচ্চগতির ইন্টারনেট, বিশ্বজয়ের হাতিয়ার কম্পিউটার ও মেধাবী তরুণ প্রজন্মকে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যমে এই তারুণ্যের মেধা ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে আমরা ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।
উল্লেখ্য, উক্ত প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশব্যাপী ফ্রিল্যান্সিংকে অগ্রাধিকার দিয়ে ৪৩টি জেলার সদর উপজেলা এবং রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলাসহ মোট ১৩০টি উপজেলায় তথ্য প্রযুক্তিতে নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চারটি ক্যাটাগরিতে (নারী ফ্রিল্যান্সার, নারী আইটি সেবাদাতা, নারী ই-কমার্স প্রফেশনাল ও নারী কল সেন্টার এজেন্ট) মোট ২৫,১২৫ জন নারীকে ০৫ (পাঁচ) মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ ও ১ মাসব্যাপী মেন্টরশীপ সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া সকল সফল প্রশিক্ষণার্থীদের একটি করে ল্যাপটপ প্রদান করা হবে। বর্তমানে ১৩০ টি উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ৪০৮ টি ব্যাচে ৮৪৬০ জনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে ল্যাপটপ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন, সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আশরাফুজ্জমান, সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য আ, ফ, ম রুহুল হক, সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেজুতি, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জনাব মো: নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী।
বাংলাবার্তা/এআর