ছবি : সংগৃহীত
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পৃথিবীর শীর্ষ দেশ গুলোর মধ্যে একটি। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ সুপেয় পানির সরবরাহ ঠিক রাখাই হবে আমাদের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
রোববার (২৪ মার্চ) বিকালে ইউনিসেফ আয়োজিত বিশ্ব পানি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে ঢাকার একটি অভিজত হোটেলে "শান্তির জন্য পানি" শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, লবণাক্ত পানির কারণে জীববৈচিত্র্য এবং কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সুপেয় পানির উৎসস্থল সংকুচিত হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ কিন্তু তারপরও আমাদের গৃহস্থালি, কৃষি, শিল্পসহ নানা ক্ষেত্রে আমাদের মিঠা পানির প্রয়োজন হয়। আমাদের ভূগর্ভস্থ পানের স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে তাই ভবিষ্যতে পান করার জন্য পানি সরবরাহ একটি চ্যালেঞ্জ হবে। সেজন্য সরকার এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির পানি অর্থাৎ ভূউপরিভাগের পানি সংগ্রহ করে কাজে লাগানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছে।
তাজুল ইসলাম এ সময় শিল্প কারখানার বর্জ্য পানি এবং পয়োনিস্কাসনের পানি পরিশোধন করার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এই দুই উৎসস্থলের পানি অপরিশোধিত হলে তা আমাদের পরিবেশের ক্ষতি করে এবং সুপেয় পানিকেও তা দূষিত করে।
এদিকে, মন্ত্রী আজ সকালে আগারগাঁও এ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে দুটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বক্তব্যে বিদেশী ঋণের বিষয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৫ বছরে দেশের অর্থ সামাজিক ক্ষেত্রে যে উন্নতি হয়েছে তাতে বিদেশি অনেক বন্ধু রাষ্ট্রের সহযোগিতা রয়েছে। আমাদের মিডিয়ায় বিদেশী ঋণ নিয়ে অনেক সমালোচনা করা হয় কিন্তু ঋণ নিয়ে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয় তার ফলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানুষের ইনকাম বৃদ্ধি পেয়েছে, আয় রোজগারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং সামগ্রিকভাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (আইইউজিআইপি) ও দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্প (এসসিআরডিপি) নামক প্রকল্প দুটির অর্থায়ন করে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি জাইকা, এডিবি ও এএফডি। জুন ২০২৮ সাল নাগাদ নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (আইইউজিআইপি) সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে যেখানে মোট ৬০২ মিলিয়ন ইউএস ডলার খরচ হবে এবং ডিসেম্বর ২০২৮ সালে শেষ হয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্পে (এসসিআরডিপি) মোট প্রায় ৩,৬৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
প্রকল্প দুটির উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিকল্পনা অনুযায়ী টেকসই নগরায়ন, নগর পরিচালন ব্যবস্থার উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করা, দক্ষিণ চট্টগ্রামের জীবন মানের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুইডেনের এম্বাসেডর আলেক্সান্ডরা বার্গ ভন লিনডে, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এমা ব্রিগহাম, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার টিম লিড ড. রাজেন্দ্র বোহরা এবং সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহীম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. শের আলী, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং, এএফডি বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সিসিলিয়া কট্রিস, জাইকার বাংলাদেশ প্রধান ইচিগুচি তোমোহিডে। এছাড়াও প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন পৌরসভার মেয়রগণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাবার্তা/এআর