ছবি : সংগৃহীত
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব (কর) কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালসহ ১৪ জনের ৮৭টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আদেশ দিয়েছে আদালত। সেই সাথে আবু মাহমুদ ফয়সালসহ ৭ জনের নামে ১৫টি সঞ্চয়পত্রের ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা অবরুদ্ধ করেছেন আদালত। একই আদেশে ফয়সালের স্ত্রী আফসানাসহ ৪ জনের সম্পত্তি জব্দ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত ব্যাংক হিসাব, সঞ্চয়পত্র অবরুদ্ধ ও স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেন।
ফয়সাল ছাড়া অন্য যাদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে তারা হলেন: শেখ নাসির উদ্দিন, মমতাজ বেগম, রওশন আরা খাতুন, আহম্মেদ আলী, খন্দকার হাফিজুর রহমান, ফারহানা আফরোজ, আশরাফ আলী মুনির, আফতাব আলী তানির, মাহফুজা আক্তার, মাইনুল হাসান, আফসানা জেসমিন, মাহমুদা হাসান ও কাজী খালিদ হাসান।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ফয়সাল ও তার স্ত্রী আফসানার নামে জলসিঁড়ি আবাসন প্রকল্পে মোট ২ কোটি ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে ৫ কাঠার প্লট কিনেছিলেন। দুদক অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অপরাধলব্ধ সম্পদ বিক্রি করার চেষ্টা করছেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়।
আবেদনে বলা হয়, অবৈধ ভাবে অর্জিত সম্পদ মানিলন্ডারিং আইনের ১৪ ধারায় কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল, তার স্ত্রী আফসানা জেসমিন এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিদের নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর, বিক্রয় বা মালিকানাস্বত্ব বদল রোধ করতে ব্যাংক হিসাব, ব্যাংকে রক্ষিত সঞ্চয়পত্র ও নন ব্যাংকিং ফাইনান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানের আমানতসমূহ থেকে অর্থ উত্তোলন অবরুদ্ধ এবং স্থাবর সম্পদ জব্দ করা প্রয়োজন।
কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের নামে ডাচ বাংলা ব্যাংকে ৫০ লাখ টাকার দুটি সঞ্চয়পত্র, তার স্ত্রী আফসানা জেসমিনের নামে চারটি সঞ্চয়পত্রে ৫০ লাখ টাকা, আফতাব আলীর নামে দুটি সঞ্চয়পত্রে ৩০ লাখ টাকা, কাজী খালিদ হাসানের নামে একটি সঞ্চয়পত্রে ৩০ লাখ টাকা, খন্দকার হাফিজুর রহমানের নামে দুটি সঞ্চয়পত্রে ৪০ লাখ টাকা, আহম্মেদ আলীর নামে তিনটি সঞ্চয়পত্রে ৫০ লাখ টাকা ও মাহমুদা হাসানের একটি সঞ্চয়পত্রে পাঁচ লাখ টাকা রয়েছে।
সম্প্রতি ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনার জন্ম দেন আরেক এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে ইফাত। মতিউরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তাকে বর্তমান দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় এনবিআর। তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। এবং তাকে সোনালী ব্যাংক পিএলসির পরিচালক পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত। তার বিরুদ্ধেও ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক।
মতিউরের স্ত্রী-সন্তান ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে দেশে শত শত কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদের খোঁজ মিলেছে।
বাংলাবার্তা/এআর