সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক

দুর্নীতি করে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, নেত্রকোণা-৩ আসনের সাবেক এমপি অসীম কুমার উকিল ও তার স্ত্রী যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল এবং সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশন বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ দপ্তর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, প্লট বরাদ্দের নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খানেকে ২০১৪ সালে তাকে তলব করে দুদক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জয়ী হলেও তাকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়নি। নির্বাচনীয় হলফনামায় তিনি পেশা হিসেবে রাজনীতি, সাধারণ ব্যবসা ও অন্যান্য উল্লেখ করেছেন। সম্পদের অর্জনের মধ্যে রয়েছে, শাজাহান খানের দুটি গাড়ি রয়েছে, স্ত্রীর নামে ৯৬ ভরি সোনা, দুটি বাস, একটি গাড়ি ও একটি মাইক্রোবাস। এছাড়া স্ত্রীর নামে রয়েছে রাজউকের ১০ কাঠার প্লট ও অন্যান্য স্থাবর সম্পদ।

অসীম কুমার উকিল ও তার স্ত্রী অপু উকিলের বিরুদ্ধেও রয়েছে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ। অবৈধ সম্পদের অর্থে ঢাকা উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর, ১৮ নম্বর রোড, ১৫ নম্বর বাড়িতে দুই ইউনিটে ৭ তম তলা তথা ১৪টি প্লট ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জন করছেন। ঢাকার ধানমন্ডি ১১ নম্বর রোড, ৪০ নম্বর বাড়িতে ৩টি ফ্ল্যাট, নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া পৌরসভার সাউদপাড়ায় রাজকীয় ব্যয়বহুল বাড়ি করেছেন। এছাড়া নেত্রকোণা সদর পৌরসভার কাটলী মৌজায় মূল্যবান জায়গা,  ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত বাড়ি। দেশের বাইরে আমেরিকা ও কানাডায় এই দম্পত্তির দুই ছেলে সায়ক ও শুদ্ধের বাড়ি রয়েছে।

অন্যদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের হলফনামা ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, হলফনামায় তার স্ত্রীর নামে ২০ একর জমি, দিনাজপুর শহরে একটি বাড়ি, নিজ এলাকায় বহুতল ভবন, খামার বাড়ি, স্ত্রী-কন্যা-ভাইয়ের জন্য আলাদা আলাদা গাড়ি, দিনাজপুর রোডে শিবনগর ইউনিয়নের ফকিরপাড়ায় প্রায় ২৪ একর জমির ওপর একটি খামার বাড়ি থাকারও তথ্য রয়েছে। 

২০০৮ সালের নির্বাচনী হলফনামায় হেনরীর সম্পদের পরিমাণ ছিল মাত্র আড়াই লাখ টাকা। তার প্রতি শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। শুধু ২০২০-২১ অর্থবছরেই এই নেত্রীর কালো টাকা সাদা করেছেন প্রায় ৩২ কোটি। নিজ জেলা সিরাজগঞ্জ নয়, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, পটুয়াখালী ও রাজধানী ঢাকায় তার অঢেল সম্পদের অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এরমধ্যে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সিরাজগঞ্জে গড়ে তুলেছেন ‘হেনরী ভুবন’।