ছবি : সংগৃহীত
চলতি মাসের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগের পর দেশে ক্ষমতার পালাবদল শুরু হয়। নতুন করে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আর এর আগে সাবেক ক্ষমতাসীন দলে প্রভাবে এক প্রকার নিরব ও পুতুলের ভূমিকায় ছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের চেয়ারম্যান ও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের পদত্যাগ ও অপসারণে নতুন করে গতি পেয়েছে এই সংস্থাটি।
গত ৭ দিনে শেখ হাসিনার সরকারের প্রভাবশালী ৫০ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মামলাও হয়েছে ডজনের বেশি। তবে দুদকের কর্মকর্তারাই বলছেন, কমিশন নিজেদের দায় এড়াতে তড়িঘড়ি করে অভিযোগপূর্ণ তদন্ত না করে আংশিক প্রতিবেদন দিয়েই মামলা করে দিচ্ছে। এর ফলে অপরাধীদের খালাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, সাবেক ক্ষমতাসীন সরকারের পতনের পর থেকেই সাবেক মন্ত্রী, এমপি, রাজনৈতিক নেতা, আ.লীগ নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক।
এই তালিকায় রয়েছেন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও শ্রমিক নেতা শাজাহান খান। মাদারীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও সাবেক চিফ হুইফ নূরে আলম চৌধুরী, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক ত্রাণ ও দুযোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক, সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।
আরও রয়েছে, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, শিল্পপ্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, সাবেক পররাষ্ট্বমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান। জয়পুরহাট-২ আসনের সাবেক এমপি আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক এমপি শেখ হেলাল উদ্দিনসহ আরও রয়েছে আওয়ামী লীগের সাবেক প্রভাবশালী অনেক এমপি।
দুদক আরও যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে তারা হলো: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামাল, ঢাকা ওয়াসার সাবেক এমডি তাকসিম আহমেদ খান, সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামাল। ২০২০ সালে শাহ কামালকে দায়মুক্তি দেয় দুদক। শাজাহান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ায় ২০১৪ সালে তাকে দুদকে তলব করা হয়েছিল।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন এই বিষয়ে বলেন, দুদক যে কার্যক্রমগুলো করছে, আপনারা দেখে থাকবেন বিগত দিনের থেকেই এখন অনেক গতি এসেছে। এটা আপনাদের স্বীকার করতেই হবে। আমাদের কাছে অভিযোগ এলে সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।
বাংলাবার্তা/এআর