ছবি : সংগৃহীত
স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঠেকাতে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আলোচনায় আসা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ ভোল পাল্টে বিএনপিপন্থী সাজতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এতে দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে কোণঠাসা থাকা বিএডিসি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের দানা বাঁধছে।
এমনকি, হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের তিন-চার দিনের মধ্যেই সুযোগ বুঝে বিএডিসির ৩৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করে নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে পদায়ন করেছেন সংস্থাটির আলোচিত চেয়ারম্যান।
সংশ্লিষ্টদের মতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া উপদেষ্টার নির্দেশনা পাওয়ার আগেই এমন বদলি-পদায়ন বড় ধরণের চালাকি। এছাড়াও কয়েকজন বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে তাদের মাধ্যমে চেয়ার টিকিয়ে রাখতে এবং বড় বড় দুর্নীতি-অনিয়মের শাস্তি থেকে রেহাই পেতে ভোলপাল্টে বিএনপিপন্থী সাজতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ।
বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, স্বৈরাচার সরকারের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপসচিব, এরপর পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সচিবের দায়িত্ব পালনকালে ফের পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত সচিব পদে কৃষি মন্ত্রণালয়ের (বীজ) অনুবিভাগের মহাপরিচালকের চেয়ারে বসেন আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ। সেখানে দায়িত্ব পালনকালে নিজেকে আওয়ামী লীগের লোক নিশ্চিত করে ২০২৩ সালের জানুয়ারির শুরুতে কৃষি সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ বিএডিসি চেয়ারম্যানের পদে নিয়োগ পান তিনি। তবে অল্প দিনেই অনিয়ম-দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতির ছাড়াও তৎকালীন কৃষিমন্ত্রীকে খুশি করতে কোণঠাসা করেন ভিন্ন দল-মতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এতে অল্প দিনেই পতিত সরকারের আনুকূল্য লাভ করেন বিএডিসি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ।
জুলাই মাসে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন শুরু হলে ছাত্রদের বিরুদ্ধে নিজেই রাজপথে নামেন বহুল আলোচিত এই সরকারি কর্মকর্তা। সরকার পতনের আগের দিন গত ৪ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পক্ষে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে শান্তি সমাবেশ ও মিছিলে অংশ নেন বিএডিসি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ। বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা সৃষ্টি হয়। তবে পরদিন শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি বিএনপিপন্থী সেজে প্রভাব ধরে রাখছেন।
এ প্রসঙ্গে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড.ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই আন্দোলনের বিরোধিতা করার অর্থ এই হচ্ছে যে, যারা বিরোধিতা করেছেন সেক্ষেত্রে বিএডিসি চেয়ারম্যান যদি করে থাকেন সঠিক হয়ে থাকে তাহলে তিনি সংবিধান লংঘন করেছেন বলে মনে করি। এই অর্থে যে, সংবিধানে যে মৌলিক অধিকারগুলো নির্ধারিত আছে। সেই অধিকারগুলো যারা চর্চা করছিলেন তাদের বিরুদ্ধে তিনি অবস্থান করেছেন।
বাংলাবার্তা/এআর