ছবি : সংগৃহীত
বই উৎসবের দিন খুবই নিকটে। প্রতি বছরের শুরুর প্রথম দিনেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ছাত্র- ছাত্রীরা হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক পেয়ে থাকে। বিগত বেশ কয়েক বছর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এটি করা হচ্ছে। এই দিনটি শিক্ষার্থীদের আনন্দের দিন। তারা খুশিমনে স্কুলে যায় এক উৎসবমুখর পরিবেশে বই আনার জন্য। নতুন বই পেয়ে তারা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়ে। কিন্তু এ বছর নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে মাত্র দুই মাস বাকি থাকলেও এখনো চূড়ান্ত হয়নি অধিকাংশ পাঠ্যবইয়ের পাণ্ডুলিপি। শুধু তাই নয়, কয়েকটি শ্রেণিতে হয়নি টেন্ডার ও বই ছাপার চুক্তিও। শুধু প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণির বই ছাপা শুরু হয়েছে। প্রাক প্রাথমিক, চতুর্থ। ও পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।
তবে মাধ্যমিক শ্রেণির বই ছাপা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি এ পর্যায়ের বই ছাপার কাজ। ফলে জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছানো নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, দরপত্র আহ্বানে দীর্ঘসূত্রতা, বাতিল করে পুনঃদরপত্র আহ্বান ও বইয়ের বিভিন্ন অংশ সংযোজন-বিয়োজন করায় এখনো বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কার্যক্রম খুব একটা এগোয়নি। বই ছাপার ক্ষেত্রে নতুন করে একটি সমস্যা তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট করে প্রাক্কলিত দর থেকে বেশি দামে টেন্ডার আহ্বান করছেন। এতে সরকারের খরচও বাড়ছে। এ বিষয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল। এ ছাড়া শুধু ১০ম শ্রেণির জন্য অতিরিক্ত ৫ কোটি বই বেশি ছাপাতে হবে। আগে বই ছাপাতে ১৫০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও এবার তা দুই হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হতে পারে।
পুস্তক ব্যবসায়ী ও প্রকাশকরা জানান, আশা করা যাচ্ছে প্রথম শ্রেণি, দ্বিতীয় শ্রেণি ও তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবই জানুয়ারির এক তারিখেই শিক্ষার্থীদের হাতে উঠবে। ডিসেম্বরের ভেতর দেশের সব উপজেলায় ক্লাস ৪ ও ৫ এর বইও পৌঁছে যাবে। তবে বিপত্তি তৈরি হবে মাধ্যমিক স্তরের বই নিয়ে।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যগুণ বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) প্রফেসর ড. রিয়ান চৌধুরী জানান, শুধু প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণির বই ছালা শুরু হয়েছে। অন্যগুলো অনুমেলনের অপেক্ষায় রয়েছে সময়ের মধ্যেই অত্তরণ্যে ছাপার কাজ শুরু হবে। তবে তিনি এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তারিখ জানাতে পারেননি।
এনসিটিবির সদাচারা জানান, এ বছর বইয়ের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে শিক্ষা উপদেষ্টা বিশেষ আন্তরিক। যে বাস্তবে কাগজ, প্রিন্টে কোনো ভাড বেওয়া হয়ে না বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে
রিয়াদ চৌধুরী আরও বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিধোনায় আমাদের এই বই ছাপার প্রক্রিয়া শুরু হতে দেরি হয়েছে। তারপরে টেন্ডার প্রক্রিয়া। অনুমোদন, যাচাই-বইয়ে যাওয়ার পর ছাপার কাজের দেরি হয়েছে। তিনি আশা করেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় বই চাশ্যর কাছ শুরু হবে। আমাদের মূল সমস্য ছিল, অনেক বাগেই টেনেয়া করা হয়েছিল। পরে বাতিল করে সময় চলে গেছে। আমরা তাশা করছি, দ্রুত কাজ শেষ করা হবে।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, এবার স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই কোটি শিক্ষার্থীর জন্য। ১৪০ কোটি বিনামূল্যের বই মগানোর কথা রয়েছে এ ছাড়া প্রত্যেক শ্রেণিতে জুলাই-আগস্টের আন্দেলনের গ্রাফিতি (দেয়ালচিত্র) যুক্ত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাদে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তাদের অবসাদকেও বস্তুনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে বইয়ের প্রচ্ছদ থেকে বাদ পড়ছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনায় অনি সংবলিত উক্তি। কিন্তু জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এখনে সব বই ছাপানের চুক্তি শেষ করতে পারেনি। এখনো চলছে সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজ। ২০১২ সাদের লারিক্যুলামের কারণে এবার বই স্থাপতে হবে প্রায় ৪০ কোটি। এর মধ্যে প্রাথমিকে ৯ কোটি ও বাকি ৫১ কোটি মাধ্যমিক স্তরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, মাধ্যমিক শ্রেণির বই ছাপার উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই এখনো শেষ হয়নি পরিমার্জন, অধিকাংশ টেন্ডারও চুরুত্ত হয়নি। তারপরে রয়েছে অনুমোদন ও পাণ্ডুলিপি হস্তান্তর। সূত্রটি জনায়, এ প্রক্রিয্য শেষ করে বইহাগ শুরু হবে চলতি মাসের ২০ তারিখ পার হতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাপাখানা মালিনয়া বলছেন, প্রতি বছর যে-জুন বাই স্থাশার কাজ জজ হয়। অক্টোবরের শেষে শেষে বইয়ের অর্ধেক স্থাপনো শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখনো সব টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। যে কারণে কিন্তু এই জানুয়ারিতে আর অধিকাংশ এই শিক্ষার্থীদের হাতে উড়তে এপ্রিল মান পর্যন্ত ভাষাতে পারে।
বাংলাবার্তা/এমআর