ছবি : সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত মোহাম্মদ বাবুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়েছে। ব্যাংককের একটি উন্নত হাসপাতালে জুলাই বিপ্লবের এই সৈনিকের চিকিৎসা হবে। বাবুর সঙ্গে তার বোন সুবর্ণাও রয়েছেন।
আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা ১১টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
বাবুকে বিদায় জানাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবু জাফর।
৩৬ বছরের মোহাম্মদ বাবু কাজ করতেন রাজধানীর নয়াপল্টনের ছাপাখানায়। আন্দোলনের সময় ছাপাখানা বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনি ঘরে বসে ছিলেন না। যোগ দের শেখ হাসিনা পতনের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে। তার বাসা শনিরআখড়ায়। তিনি সেখানেই প্রতিদিন আন্দোলনে যোগ দিতেন।
জানা যায়, ‘বাবু ২০ জুলাই সকালে আন্দোলনে যোগ দেন। গলি থেকে তাদের মিছিলটি প্রধান সড়কে যায়। এই সময় বিজিবি হেলিকপ্টারে টহল দিচ্ছিল। আচমকা হেলিকপ্টার থেকে শুরু হয় গুলি বর্ষণ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাবু ৫ থেকে ৬ হাত দূরে ছিটকে পড়েন। পুলিশ তাকে ঘিরে ধরে রাখে। রক্তে ভিজে যায় রাস্তা। পরিচিত একজন তার বোনকে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। বোন বাবুর ৪ বন্ধুসহ ভাইকে উদ্ধার করতে আসেন। কিন্তু পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আর রক্তাক্তপড়ে থাকেন রাস্তায়।
‘এদিকে, বাবুর রক্তক্ষরণ হতেই থাকে। অন্তত পাঁচ ঘণ্টা পর বোনজামাই এসে বাবুকে স্থানীয় মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। সেখানে শুরু হয় আরেক সমস্যা। কেন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে, এই কারণে চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হয়। ওই দিকে রক্তশূন্য হয়ে বাবু মৃতপ্রায়। মুক্তিযোদ্ধা বাবা এই দিন চিকিৎসকদের পায়ে পর্যন্ত ধরেন।’
এদিকে মেয়ে হাজতে বন্দি। তাকে ছাড়াতে যান মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান। পুলিশ তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়। পরে রাতে পুলিশ ফোন করে স্বামীকে চার হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলে। ধারদেনা করে টাকা দিলে মুক্তি মেলে বাবুর বোনের। আর বাবুর বন্ধুদের পাঠানো হয় কারাগারে।
আহত বাবুর পেটের নিচের অংশ দিয়ে ঢুকে কোমরের পেছন দিয়ে বের হয়ে যায় বুলেট। গুলি ছিন্নভিন্ন করে বাবুর খাদ্যনালি, মূত্রথলি, কোমরের হাড়।
মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমকে জানানো হলে তিনি বাবুকে থাইল্যান্ডে নেয়ার ব্যবস্থা করেন।
বাংলাবার্তা/এমআর