ছবি : সংগৃহীত
ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে প্রবাসী, পোশাক শ্রমিকসহ দেশে মানুষের রক্ত-ঘাম ভেজা রেমিট্যান্স বিদেশে পাচার হয়েছে। হাসিনা শাসনের শেষ ১০ বছরে টাকা পাচারের লাগাম ছিড়ে যায়। এই হয়েছে শেখ পরিবারের সরাসরি আশ্রয়-প্রশ্রয়ে।
এসব অর্থ দেশে ফেরাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য সরকার উচ্চ পর্যায়ে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে। অর্থপাচারের অনুসন্ধান ও তদন্তের ক্ষমতাপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো নিরলস কাজ করছে।
পাচারকারীদের পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার চেষ্টার পাশাপাশি বিদেশে অপ্রদর্শিত অর্থ ও সম্পদের বিপরীতে তাদের দেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এর পরই পতিত সরকারের দুর্নীতির নানা দিক বের হতে থাকে। তথ্য-উপাত্ত বলছে, দলটি ক্ষমতায় থাকাকালে প্রায় ১৬ বছরে অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার সব সীমা ছাড়িয়ে যায়। বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে সামনে রেখে শেখ রেহানা ও পুরো শেখ পরিবারের সদস্যরাও বেপরোয়া ছিলেন।
তাদের আত্মীয়-স্বজনের নাম ভাঙিয়েও অনেকে অনিয়ম-দুর্নীতি করে টাকা কামিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর ওই সব টাকা বিদেশে পাচার করেছে। খোদ শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সাবেক স্বামী খন্দকার মাশরুর হোসেন একবার পাচারের টাকাসহ দুবাইয়ে আটক হওয়ার ঘটনাও ঘটে। এ রকমভাবে অনেক দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর আমলা, রাজনীতিবিদ, এমপি, মন্ত্রীও ওই সময় দুর্নীতির টাকা তাদের প্রশ্রয়ে পাচার করেছিলেন বলে আলোচনা রয়েছে।
যারা বিদেশে আজকে শীর্ষ ধনী হয়েছেন, আলাদা সাম্রাজ্য গড়েছেন, তারা সরাসরি শেখ পরিবারের প্রশ্রয় পেয়েছিলেন বলে প্রচার রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় যত তদন্ত, অনুসন্ধান হচ্ছে—এ বিষয়গুলো নজরে আনছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এনবিআরের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইসি সূত্র জানায়, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আমলা, পুলিশসহ সরকারি চাকরিজীবী, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান-পরিচালক, ঊর্ধ্বতন ও মাঝারি স্তরের কর্মকর্তাদেরও অর্থপাচারের তথ্য হাতে এসেছে। কর ফাঁকিবাজ ও অর্থ পাচারকারী এমন সন্দেহজনক প্রায় ২০০ ব্যক্তি ও তাদের পরিবারকে নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে সিআইসি। দেশের বাইরে তাদের সম্পদ আছে কি না জানতে বিভিন্ন দেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে।
বিস্তারিত তথ্য হাতে পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে গোয়েন্দা সংস্থাটি।
বাংলাবার্তা/এমআর