ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ সচিবালয়ে আগুন লাগার ঘটনা নতুন নয়, আগেও কয়েকবার অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। তখন ঝুঁকি কমাতে বেশ কিছু সুপারিশ করে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। তবে সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। সচিবালয়ের বিভিন্ন দফতর সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনে ব্যবহার হয়েছে প্রজ্বলন উপযোগী উপকরণগুলো। এগুলো অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি আরো বাড়িয়েছে।
সচিবালয়ে সদ্য লাগা আগুন নিয়ে নানান আলোচনা-গুঞ্জন থাকলেও তা নেভাতে এত সময় লাগার বিষয়টি ভাবাচ্ছে নতুন করে। এটি সচিবালয়ে অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার বিষয়টি প্রকট করে তুলেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফায়ার সার্ভিসের সংশ্লিষ্ট
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সচিবালয়ে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ছোটখাটো আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিস সেগুলো নেভাতে আসে। এছাড়া সচিবালয়ে মহড়া হয়েছে, ভবনগুলোর অগ্নিঝুঁকি নিরূপণে কাজ করেছে ফায়ার সার্ভিস। অগ্নিঝুঁকি কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, সেগুলো খুব একটা আমলে নেওয়া হয়নি। এবারও আগুন নেভাতে এসে একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে ফায়ার সার্ভিস। সচিবালয়ের ভেতরে ফায়ার সার্ভিসের বড় গাড়িগুলো প্রবেশ করানো যায় না। এছাড়া হোসরিল পাইপ, ফায়ার অ্যালার্ম, ফায়ার ড্রিল এবং সব ফ্লোরে হাইড্যান্ট সিস্টেম স্থাপনের পরামর্শ দিয়ে গণপূর্ত বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে।
সচিবালয়ের ভবনগুলো দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বেশির ভাগ কর্মকর্তাই নতুন। তারা জানিয়েছেন, আগে কী হয়েছে তারা জানেন না। তারা আসার পর তাদের সামনে এ বিষয়গুলো আসেনি
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, সচিবালয়ের পুরোনো কোনো ভবনই অগ্নি ঝুঁকিমুক্ত নয়। মাঝেমধ্যেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে সেগুলোতে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। এর আগে গত ১ আগস্ট সচিবালয় ক্লিনিক ভবনে (৯ নম্বর ভবন) নিচ তলায় সিঁড়িকোঠায় বিদ্যুতের মেইন ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ডে (এমডিবি) আগুন লাগে। তবে সচিবালয়ের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাৎক্ষণিক আগুন নিভিয়ে ফেলেন। এতে বিদ্যুতের তার পুড়ে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অগ্নিকাণ্ড হয়। ৬ নম্বর ভবনের সপ্তম তলায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৬০৬ নম্বর কক্ষে ফলস সিলিংয়ের সঙ্গে থাকা টিউর লাইটের স্টার্টারে আগুন লাগে। এতেও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এর আগে ২০১৯ সালের ৭ জুলাই সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সপ্তম ও অষ্টম তলার মাঝামাঝি স্থানে বৈদ্যুতিক বোর্ডরুমে আগুন লাগে।
গ্যাস সরবরাহ লাইন থেকে ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর সচিবালয়ের ক্লিনিকের পেছনে গণমাধ্যম কেন্দ্রের সামনে উত্তর দিকের দেওয়ালে এ আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে নেস্তান সেই আগুন। এছাড়া ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ৪ নম্বর ভবনের সপ্তম তলায় ৬২৯ নম্বর কক্ষে আগুন লাগে।
বাংলাবার্তা/এমআর