
সংগৃহীত
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সৌর প্যানেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘লংগি’ বাংলাদেশে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে তাদের অফিস স্থাপন ও সৌর বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করবে।
প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে চীনা কোম্পানিগুলোর সফর
গত ডিসেম্বর মাসে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে চীনের কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় সৌর প্যানেল নির্মাতা কোম্পানির প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা যাচাই করা।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশকে উৎপাদনকেন্দ্র (ম্যানুফ্যাকচারিং হাব) হিসেবে গড়ে তুলতে চীনা কোম্পানিগুলোকে তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের আহ্বান জানান। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই লংগি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চলেছে।
চীনা রাষ্ট্রদূতের আশাবাদ
রবিবার (১৭ মার্চ) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে চীনের রাষ্ট্রদূত জানান, শুধু লংগি নয়, আরও চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তিনি বলেন, "খুব শিগগিরই দুইটি বড় চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে এবং একটি বিশেষ চীনা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (EPZ) চালু হবে।"
চীনা বিনিয়োগ বাড়ছে
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আরও বলেন, "৫ আগস্টের পর চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান বিনিয়োগকারী হয়ে উঠেছে।" বর্তমানে অনেক চীনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতেও চীনা আগ্রহ
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে চীনের বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি চীনা হাসপাতাল চেইনগুলোকে বাংলাদেশে উন্নতমানের ক্লিনিক এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপনের আহ্বান জানান।
জবাবে রাষ্ট্রদূত জানান, কুনমিং শহরের চারটি হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের জন্য নির্ধারিত হয়েছে এবং ইতোমধ্যে একদল বাংলাদেশি সেখানে চিকিৎসার জন্য গেছেন।
শিক্ষা খাতে সহযোগিতার অংশ হিসেবে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে এবং তিনি সেখানে বক্তৃতা দেবেন।
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের আসন্ন চীন সফরকে দুই দেশের ৫০ বছরের সম্পর্কের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সফর বলে উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
এই সফরের অংশ হিসেবে তিনি বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে অংশ নেবেন, যেখানে বিশ্বনেতা ও শীর্ষ নির্বাহীরা বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশ ও চীন যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে নতুন বিনিয়োগ আসবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ