
ফাইল ছবি
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করে। সেই নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে প্রার্থী ছাড়াই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ অনেক দল অংশ নিলেও, আগের রাতেই ভোটের বাক্সে ব্যালট পেপার ভরে রাখা হয়েছিল। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আবারও একতরফা ভোটগ্রহণ হয়, যেখানে আওয়ামী লীগ জিততে সক্ষম হয়। এই তিন বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা পুলিশ সুপারদের (এসপি) ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব বিতর্কিত নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করা বেশ কিছু এসপি এখনো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বহাল আছেন। অনেক এসপি, যাদের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে, তারা এখনো গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত।
২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের সময় বিভিন্ন জেলার এসপিদের অবস্থা:
-
রেজাউল হক: ২০১৪ সালে রাজবাড়ী জেলার এসপি ছিলেন। পরে ফেনী, ভোলা, এবং খুলনার দায়িত্ব পালনের পর বর্তমানে তিনি খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে কর্মরত।
-
মজিদ আলী: ২০১৪ সালে ঝালকাঠির এসপি ছিলেন। বর্তমানে তিনি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার।
-
মিজানুর রহমান: ২০১৪ সালে গোপালগঞ্জের এসপি ছিলেন, বর্তমানে নৌপুলিশের ডিআইজি হিসেবে কর্মরত।
-
রুহুল আমিন: ২০১৪ সালে দিনাজপুরের এসপি ছিলেন, বর্তমানে পুলিশ সদর দপ্তরে ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
-
আবুল কালাম আজাদ: ২০১৪ সালে পঞ্চগড়ের এসপি ছিলেন, বর্তমানে তিনি হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি।
-
এহসান উল্লাহ: ২০১৪ সালে বরিশালের এসপি ছিলেন, বর্তমানে পুলিশ একাডেমি সারদায় কর্মরত।
-
ফরিদুল ইসলাম: ২০১৪ সালে মাদারীপুরের এসপি ছিলেন, বর্তমানে তিনি ডিএমপির যুগ্মকমিশনার।
এসপিরা তাদের দায়িত্ব পালনের সময়ে গণতন্ত্রের পক্ষে না থেকে সরকারের ইঙ্গিতে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কিছু এসপি আবার তাদের ভূমিকা অস্বীকার করেছেন, তবে তাদের অধিকাংশই স্বীকার করেছেন যে, তারা সরকারের অনুকূলে কাজ করেছেন এবং এখন তারা পদোন্নতি পেয়েছেন।
এছাড়া, ২০২৪ সালে দায়িত্ব পালন করা এসপির সংখ্যা ৩৫ জনের মতো। তারা শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা ছাড়া বা সংযুক্তি না হয়ে তাদের দায়িত্বে বহাল রয়েছেন।
এছাড়া, কিছু এসপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছে, তবে তারা অনেকেই এ ব্যাপারে চুপ রয়েছেন।
এটা স্পষ্ট যে, এই বিতর্কিত নির্বাচনগুলোতে এসপিদের ভূমিকা ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা ভবিষ্যতে আরও তদন্তের দাবি রাখে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ