
ফাইল ছবি
মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা তুলসী গ্যাবার্ডের সাম্প্রতিক বাংলাদেশবিষয়ক মন্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞ ও নেটিজেনরা মনে করছেন, এটি ভারতীয় ষড়যন্ত্রেরই অংশ, যেখানে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভুল তথ্য ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।
হিজবুত তাহরিরকে সামনে আনার পরিকল্পিত চক্রান্ত
সম্প্রতি বায়তুল মোকাররম এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরিরের একটি মিছিল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়। বিশেষ করে ভারতীয় মিডিয়া এটিকে ব্যাপকভাবে প্রচার করে। এরপরই বাংলাদেশে 'চরমপন্থী উত্থান' নিয়ে মন্তব্য করেন তুলসী গ্যাবার্ড।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারত পরিকল্পিতভাবে হিজবুত তাহরিরকে সামনে এনে বাংলাদেশকে 'চরমপন্থার কেন্দ্র' হিসেবে প্রমাণ করতে চেয়েছে, যাতে আন্তর্জাতিক মহলে একটি ভিন্ন বার্তা দেওয়া যায়। তুলসীর মন্তব্যও সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ।
নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
সরকার হিজবুত তাহরিরের ৩৬ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করলেও এই সংগঠনের সাম্প্রতিক তৎপরতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। নেটিজেনদের মতে, বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হওয়ায় জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে তারা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না।
একজন নেটিজেন লিখেছেন, "যখন বিরোধী মত দমন করতে হয়, তখন গোয়েন্দারা খুবই তৎপর থাকে। কিন্তু ভারতীয় ষড়যন্ত্র ঠেকাতে তারা কেন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না?"
ভারতের অভ্যন্তরীণ বাস্তবতা নিয়ে সমালোচনা
নেটিজেনরা তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ভারত নিজ দেশে মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চালালেও বাংলাদেশকে 'ধর্মীয় চরমপন্থার হুমকি' হিসেবে উপস্থাপন করছে।
একজন গবেষক লিখেছেন, "তুলসী ভারতে থেকেও সেখানে মুসলমানদের উপর নির্যাতন দেখতে পান না। তিনি দেখেন না কিভাবে মসজিদ ভাঙা হচ্ছে, মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ নিয়ে ভিত্তিহীন মন্তব্য করেন।"
বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ কখনও ধর্মীয় চরমপন্থার কেন্দ্র ছিল না। বরং, দেশটি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য পরিচিত।
একজন বিশ্লেষক বলেন, "বাংলাদেশের জনগণ কখনোই চরমপন্থা গ্রহণ করেনি। এখানে একটি ধর্মীয় উগ্রপন্থী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হলে জনগণই সেটি রুখে দেবে।"
বিশেষজ্ঞ ও নেটিজেনদের মতে, তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য ভারতীয় ষড়যন্ত্রেরই অংশ, যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে করা হয়েছে। তবে তারা বলছেন, এতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের কোনো ক্ষতি হবে না, বরং ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা আরও বেশি উন্মোচিত হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ