
ফাইল ছবি
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সদস্যদের কারাদণ্ডের বিধান সংযোজনের প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে কমিশন। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের বিপরীতে ইসি বলছে, এটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সম্মানহানির শামিল এবং অন্যান্য সাংবিধানিক সংস্থার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
ইসির চিঠি ও আপত্তি
নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে নির্বাচন কমিশনের আপত্তির কথা জানানো হয়। এটি ঐক্যমত কমিশনের সহ-সভাপতির কাছে পাঠানো হয়েছে, যার অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এবং লেজিসলেটিভ সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিবের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
ইসি চিঠিতে জানিয়েছে:
সিইসি ও নির্বাচন কমিশনাররা আইনের ঊর্ধ্বে নন, তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এবং প্রচলিত আইন যথেষ্ট। কারাদণ্ডের বিধান সংযোজন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সম্মানহানি করবে এবং এটি অন্যান্য সংবিধান-স্বীকৃত সংস্থার সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ও ইসির মতামত
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি, পৃথক এনআইডি কর্তৃপক্ষ গঠন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য পৃথক কমিশন গঠনসহ ৩২টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে এসব প্রস্তাবের একাধিক ধারায় আপত্তি জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ইসি মনে করে, বিতর্কিত নির্বাচনের মূল কারণ রাজনৈতিক অসততা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর রাজনীতিকরণ। ভালো নির্বাচন নিশ্চিত করতে ইসির পাশাপাশি অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা, জবাবদিহিতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করা জরুরি।
রাজনৈতিক সংস্কার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
নির্বাচনব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠন করে। এতে সুশাসনের জন্য নাগরিক কমিটির সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
এই কমিটি সম্প্রতি সরকারের কাছে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেয়, যা পর্যালোচনা শেষে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই চূড়ান্ত সংস্কার প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হবে।
সার্বিকভাবে, ইসি মনে করে নির্বাচনব্যবস্থায় জবাবদিহিতা জরুরি হলেও, কমিশনের সদস্যদের কারাদণ্ডের বিধান একটি অপ্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, যা প্রতিষ্ঠানটির মর্যাদার জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ