
ফাইল ছবি
দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল চোরাচালান, মানবপাচার এবং লাগেজ চুরির মতো অপরাধমূলক কার্যক্রম। এসব অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং চাঁদাবাজির একটি গোপন সংস্কৃতি। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কয়েকজন কর্মকর্তার জড়িত থাকার অভিযোগও উঠে এসেছে বিভিন্ন সময়ে। এসব অপরাধের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ২০১৬ সালে বিমানবাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ দেয় সরকার, যা বিমানবন্দরে শৃঙ্খলা আনতে সহায়তা করে।
তবে বিমানবাহিনীর উপস্থিতির কারণে বেশ কিছু অসৎ কর্মকর্তার অবৈধ উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায়, যা চোরাচালান এবং মানবপাচারের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল। এই পরিস্থিতি সৃষ্টির পর চোরাচালান সিন্ডিকেটের সদস্যরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিমানবাহিনীর সদস্যদের বিমানবন্দর থেকে সরাতে চায়।
১৭ মার্চ, ২০২৫ তারিখে, বেবিচকের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এর ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করা হয়, যা তীব্র যানজট সৃষ্টি করে। এতে রাজধানী এবং দেশের উত্তর-মধ্যাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে, অনেক বিদেশগামী যাত্রী তাদের ফ্লাইট মিস করেন।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, বিমানবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতির পর বিমানবন্দরে ঘুষ, চোরাচালান এবং অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ডের ধারা থেমে গেছে। কিন্তু কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই পরিবর্তনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করছে। তাদের প্রতিবাদ ও আন্দোলনে বিদেশি সন্ত্রাসীদেরও অংশগ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কিছু কর্মকর্তার আশঙ্কা, আগামী বছর বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে নতুন জনবল নিয়োগে নিজেদের প্রার্থী নিয়োগ করার সুযোগ হারাবে তারা। তাই তারা চলমান আন্দোলনকে উসকে দিয়ে নিজেদের পক্ষে অবস্থান তৈরি করতে চাইছে।
বেবিচক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিমানবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে বিমানবন্দর পরিচালনা অব্যাহত রাখবে, যাতে যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করা যায় এবং যাত্রীদের মধ্যে সন্তুষ্টি বজায় থাকে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ