
ফাইল ছবি
ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশিদের জন্য মেডিকেল ভিসা প্রদানে কঠোরতা আরোপ করেছে, ফলে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাতায়াতে ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। তবে এই পরিস্থিতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে চীন, যারা বাংলাদেশিদের জন্য চিকিৎসা সুবিধা সহজ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্ট থেকে ভারত প্রতিদিন এক হাজারেরও কম মেডিকেল ভিসা দিচ্ছে, যেখানে আগে এই সংখ্যা ছিল ৫ থেকে ৭ হাজার। এতে চিকিৎসার জন্য ভারতমুখী বাংলাদেশিরা নতুন বিকল্প খুঁজতে বাধ্য হচ্ছেন।
বাংলাদেশ সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, “যখন একটি সুযোগ কমে যায়, তখন অন্য কেউ এসে সেই শূন্যস্থান পূরণ করে। এখন অনেকেই থাইল্যান্ড ও চীনের দিকে ঝুঁকছেন।”
চীনের নতুন উদ্যোগ
ভারতের ভিসা নীতির কড়াকড়ির সুযোগ নিচ্ছে চীন। চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানান, বাংলাদেশি রোগীদের জন্য মেডিকেল ট্যুরিজমের সম্ভাবনা যাচাই করতে সম্প্রতি একদল বাংলাদেশি নাগরিক ইউনান প্রদেশ সফর করেছে। চীন ঢাকায় একটি ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল চালু করার পরিকল্পনাও করছে এবং চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশিদের প্রবেশাধিকার সহজ করতে চায়।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা কোনো তৃতীয় পক্ষকে লক্ষ্য করে নয়, বরং পারস্পরিক উন্নতির জন্য করা হচ্ছে।”
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রভাব
ভারতের ভিসা সীমিতকরণের বিষয়টি শুধু সরকার নয়, বরং সাধারণ মানুষের মধ্যেও অসন্তোষ সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদে প্রভাবিত হতে পারে।
ভারতের জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হ্যাপিমন জ্যাকব মনে করেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় একটি বড় কৌশলগত পরিবর্তন হচ্ছে, যেখানে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় উঠে আসছে।”
এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য খাতে সম্পর্ক আরও গভীর করতে এই মাসেই চীন সফরে যাচ্ছেন এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিবর্তন দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক চিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক তৈরি করতে পারে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ