
ছবি: সংগৃহীত
দেশে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের ভোটাধিকার হরণ, দুর্নীতি, গুম এবং খুনের মাধ্যমে এক ফ্যাসিবাদী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, তবে বর্তমানে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ এসেছে, এবং এই সুযোগকে হারানো যাবে না।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস এসব কথা বলেন। তিনি আরও জানান, স্বাধীনতার পর থেকে দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে যে ধরনের অস্থিরতা ছিল, তা থেকে মুক্তির জন্য আজকের এই নতুন সুযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ড. ইউনূস বলেন, "এক সময় একটি ফ্যাসিবাদী সরকার দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল এবং জনগণের মৌলিক অধিকারকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছিল। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা একটি নতুন যুগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এই সুযোগ হারাতে হবে না, বরং এ সুযোগের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন এবং সৎ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।"
এছাড়া, স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান সংক্রান্ত এক উল্লেখযোগ্য মন্তব্যে ড. ইউনূস বলেন, "বদরুদ্দীন উমর, যিনি একটি পুরস্কার গ্রহণ করবেন না, তার পদকটি জাতীয় যাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে।" তিনি আরও বলেন, "আগামীতে যেন মরণোত্তর পুরস্কারের পরিবর্তে জীবিত অবস্থাতেই পুরস্কার দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করার দিকে নজর দেওয়া হবে।"
ড. ইউনূস স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, "২৫ মার্চের ভয়াল দিনটি মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে। এই দিনেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরীহ বাঙালিদের নির্বিচারে হত্যা করেছিল।"
স্বাধীনতা পুরস্কারের এবারের প্রাপকরা হলেন:
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর)
সাহিত্য: মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর)
সংস্কৃতি: নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর)
সমাজসেবা: স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর)
মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতি: মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান (আজম খান) (মরণোত্তর)
শিক্ষা ও গবেষণা: বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর
প্রতিবাদী তারুণ্য: আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)
এবারের স্বাধীনতা পুরস্কারের প্রদান অত্যন্ত বিশেষ এবং তা বাঙালি জাতির জন্য গর্বের মুহূর্ত। পুরস্কারপ্রাপ্তদের দেশের জন্য অমূল্য অবদান রয়েছে, যাদের জন্য জাতি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকবে।
এছাড়া, ড. ইউনূস আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এ ধরনের পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে তাদের অবদানকে জাতি কখনো ভুলবে না।