
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বাণিজ্যিকভাবে চালুর জন্য ৯০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরীক্ষামূলক সম্প্রচারের সময় স্টারলিংক তাদের বিদেশি স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে ব্যবহার করলেও, বাণিজ্যিক সেবা চালুর সময় এনজিএসও নীতিমালা অনুসরণ করে কোম্পানিটি স্থানীয় ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে বা আইআইজি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।
বিনিয়োগ সম্মেলনে পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
আগামী ৭ এপ্রিল ঢাকায় চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে। এ সম্মেলনে স্টারলিংকের ইন্টারনেট পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারের সুযোগ থাকছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী জানান, ৯ এপ্রিল থেকে বিনিয়োগ সম্মেলনে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে। কারিগরি সহায়তা দেবে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)।
ইন্টারনেট বন্ধের শঙ্কা দূর করতে নীতি প্রণয়ন
গত ৯ মার্চ প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক আলোচনাসভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে স্টারলিংককে আনা হবে। ভবিষ্যতে যাতে কোনো সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করতে না পারে, সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়ন করা হবে।’
বাংলাদেশ সফরে স্টারলিংক প্রতিনিধি দল
গত ৮ মার্চ স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসে। সফরের অংশ হিসেবে তারা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, স্টারলিংক শহর, গ্রাম, উপকূলীয় অঞ্চলসহ প্রত্যন্ত এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন ও উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করবে। বিশেষ করে লোডশেডিং ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট প্রদানে স্টারলিংকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে।
উদ্যোক্তা ও ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সম্ভাবনা
বাংলাদেশে টেলিকম গ্রেড ফাইবার নেটওয়ার্কের সীমাবদ্ধতা এবং বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে স্টারলিংকের সেবা উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, এনজিও এবং এসএমই ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে। এতে তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে এবং ডিজিটাল অর্থনীতির উদ্যোগগুলো জোরদার হবে।
ইলন মাস্ককে আমন্ত্রণ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ ফেব্রুয়ারি স্টারলিংকের প্রতিষ্ঠাতা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। সফরে তিনি বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন, যারা স্টারলিংক প্রযুক্তির প্রধান সুবিধাভোগী হবে।
বাংলাদেশের প্রযুক্তি ও ডিজিটাল কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে যাচ্ছে। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে স্টারলিংক সেবা চালুর কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ