
ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা জানান।
নির্বাচনের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "নির্বাচনের ব্যাপারে আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। আমরা চাই, এই নির্বাচনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হোক।"
তিনি আরও জানান, নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও নির্বাচনের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
গুজব ও বিভ্রান্তি নিয়ে সতর্কবার্তা
গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব সম্পর্কে সতর্ক করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একের পর এক মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। ছবি ও ভিডিও বিকৃত করে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হচ্ছে। নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসবে, এসব গুজব আরও ভয়ংকর রূপ নেবে।"
তিনি আরও জানান, এ ধরনের গুজব প্রতিরোধে জাতিসংঘের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে এবং জাতিসংঘ মহাসচিব এ বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
জুলাই অভ্যুত্থান ও গুজবের প্রভাব
ড. ইউনূস বলেন, "জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম পর্ব সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং এর দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে। এই অভ্যুত্থান ব্যর্থ করতে গুজব একটি প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশাল অংকের অর্থ এই গুজব ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে এবং গুজবের উৎস সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের জাতীয় ঐক্য কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের স্বস্তি নষ্ট করছে। তারা এই ঐক্য ভাঙতে নানা ধরনের চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সতর্কতা ও ঐক্য দিয়েই এসব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে হবে।"
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "সংস্কার কমিশন ১৬৬টি সুপারিশসহ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়েছে এবং তারা ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে।"
তিনি জানান, ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত সংগ্রহ করছে এবং যে প্রস্তাবনায় সর্বসম্মত মত পাওয়া যাবে, সেগুলো একত্রিত করে 'জুলাই সনদ' নামে একটি তালিকা প্রকাশ করা হবে।
নির্বাচনের সুষ্ঠু আয়োজনের প্রতিশ্রুতি
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "আমাদের দায়িত্ব হলো জাতির সামনে পুরো প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছভাবে তুলে ধরা এবং নির্বাচন আয়োজন করা। আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধপরিকর।"
তিনি দেশবাসীকে গুজবে কান না দিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতিতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ