
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট কাটিয়ে আবারও পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে ভারতের আদানি পাওয়ার লিমিটেড। অর্থ পরিশোধ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে গত কয়েক মাস ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ আংশিকভাবে কমিয়ে দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তবে এখন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) নিয়মিত অর্থ পরিশোধ করায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার হয়েছে।
পরিশোধের পর বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপিডিবির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানিয়েছেন,
"আমরা আদানি পাওয়ারকে নিয়মিত অর্থ পরিশোধ করছি এবং প্রয়োজন অনুসারে বিদ্যুৎ গ্রহণ করছি।"
বিপিডিবি সূত্রে জানা গেছে, আদানি পাওয়ার লিমিটেড দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি করেছে।
এর আগে, একাধিক অর্থ পরিশোধ মিস হওয়ায় গত বছরের নভেম্বর মাসে আদানি তাদের ঝাড়খন্ডের ১,৬০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দেয়। তবে শীত মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় বাংলাদেশও বিদ্যুৎ সরবরাহ কমানোর অনুরোধ করেছিল।
আদানির পাওনা কমছে, পরিশোধ হবে ছয় মাসে
বিপিডিবির চেয়ারম্যান পরিশোধিত অর্থের নির্দিষ্ট অঙ্ক প্রকাশ না করলেও, ব্লুমবার্গ জানিয়েছে—
আদানির পাওনা ৮৫০ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে এখন ৮০০ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
আগামী ছয় মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ পরিশোধের পরিকল্পনা রয়েছে।
গ্রীষ্মে লোডশেডিং কমার আশা
বর্তমানে বাংলাদেশের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি বা তারও বেশি হয়ে গেছে। ফলে গ্রীষ্মকালীন বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদানির সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ বিভ্রাট কিছুটা কমতে পারে।
আদানির ঋণদাতাদের আশ্বস্ত করতে গ্যারান্টি দিয়েছে বিপিডিবি
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিপিডিবি আদানির ঋণদাতাদের আশ্বস্ত করতে গ্যারান্টি দিয়েছে। এটি আদানির কার্যকরী মূলধনের সংকট নিরসনে সহায়ক হবে এবং দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও সুসংহত করবে।
বাংলাদেশ-ভারত বিদ্যুৎ সহযোগিতা: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে, তাই ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরতা আরও বাড়তে পারে।
ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আরও দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তির আলোচনা চলছে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর জোর দিতে চায় বাংলাদেশ, তবে আপাতত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোই চাহিদা মেটানোর প্রধান উৎস।
সামগ্রিক প্রভাব
আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়া শিল্প উৎপাদন, কৃষি ও সাধারণ জনগণের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুবিধা বাড়াবে। তবে অর্থ পরিশোধ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ কত দ্রুত সমাধান করা যায়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ