
ছবি: সংগৃহীত
বঙ্গোপসাগরের অপার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে চীনের সহযোগিতা কামনা করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিজিটিএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বাংলাদেশ চীনের প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা ও বিনিয়োগে আগ্রহী, এবং এই সহযোগিতায় দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে।
চীনের হাইনানে অনুষ্ঠিত বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ায় অংশগ্রহণ ও বেইজিং সফর শেষে সাক্ষাৎকারটি শনিবার (৫ এপ্রিল) প্রকাশ করে সিজিটিএন। এটি ছিল ড. ইউনূসের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর।
শান্তির বার্তা ও আঞ্চলিক সহযোগিতা
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, “যুদ্ধ নয়, শান্তিই একমাত্র সমাধান। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধের প্রয়োজন নেই।” তিনি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সহাবস্থানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-কে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই উদ্যোগ শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।”
প্রযুক্তি ও স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতার আহ্বান
চীনের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও প্রযুক্তি ব্যবস্থার প্রতি বাংলাদেশের আগ্রহ প্রকাশ করে ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ চীনের স্বাস্থ্যসেবা পেতে চায়। চাইনিজ প্রযুক্তি থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার ও গ্রহণ করার আছে।”
এছাড়া তিনি জানান, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য চীনের প্রযুক্তি-সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বিনিয়োগ ও সাংস্কৃতিক বিনিময়
ড. ইউনূস চীনা শিল্প-কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ চীনের বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত। এতে উভয় দেশই লাভবান হবে।” তিনি বঙ্গোপসাগরের বিপুল সম্ভাবনাময় খাতগুলোতেও যৌথ উদ্যোগের আহ্বান জানান।
সাক্ষাৎকারে আরও উঠে আসে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে চাইনিজ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন হলে জনগণ চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি জানতে পারবে, যা দুই দেশের জনগণের মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলবে।”
সফরের গুরুত্ব
গত ২৬ থেকে ২৯ মার্চ, দক্ষিণ চীনের হাইনান প্রদেশে অনুষ্ঠিত বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নেন ড. ইউনূস। পরবর্তীতে বেইজিং সফরে চীনের ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আলোচনায় মিলিত হন তিনি। সফরটি তার প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথম আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রীয় সফর, যা বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্ক জোরদারের ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ