
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন চলতি বছর ৭ এপ্রিল শুরু হয়েছে, এবং এর তৃতীয় দিন, ৯ এপ্রিল, ছিল পুরস্কৃতদের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে তাদের বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য পুরস্কৃত করেন। এবারের সম্মেলনে মোট ৪টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃতদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়, যা দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়তার জন্য এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা ও উদ্যমের প্রতি একটি সম্মান ও স্বীকৃতি হিসেবে গণ্য করা হয়।
পুরস্কৃতদের মধ্যে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে ওয়ালটন—এটি দেশি বিনিয়োগকারীর ক্যাটাগরির পুরস্কার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। ওয়ালটন বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ইলেকট্রনিক্স এবং টেকনোলজি পণ্য উৎপাদক, যাদের ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি দেশের পণ্য উৎপাদন ও প্রযুক্তি খাতে বিপ্লব আনছে।
দ্বিতীয় পুরস্কারটি পেয়েছে বিকাশ, যেটি বিদেশি বিনিয়োগকারীর ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়েছে। বিকাশ, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ডিজিটাল পেমেন্ট খাতের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছে।
এছাড়া, স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস এবং ফেব্রিকস এই সম্মেলনে বিশেষ উল্লেখযোগ্য পুরস্কার পেয়েছে, যা তাদের অবদান ও দেশের শিল্প উন্নয়নে প্রদত্ত ভূমিকার স্বীকৃতি। স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, যার আন্তর্জাতিক বাজারেও খ্যাতি রয়েছে। অন্যদিকে, ফেব্রিকস খাতের উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য পুরস্কৃত হয়েছে।
একই সময়ে, সম্মেলনের বিশেষ ক্যাটাগরিতে কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং কে সম্মান সূচক নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়, যা তার জীবনভর বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং বাংলাদেশে শিল্প ও ব্যবসার বিকাশে সহায়তা করেছেন।
এসময়ের মধ্যে, বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ড (বিডা) আয়োজিত এই সম্মেলনে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের ক্ষেত্র প্রসারের লক্ষ্যে বিভিন্ন আলোচনা ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা দেশের দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও বেশি সুযোগ সৃষ্টি করার বিষয়ে সরকারের দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা তুলে ধরেন।
এভাবে, এই সম্মেলন একদিকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, অন্যদিকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের অবদান ও সাফল্যের জন্য প্রশংসা জানিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে এক বিশেষ মর্যাদায় উন্নীত করেছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ