
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর প্রতীক হিসেবে বহুল ব্যবহৃত লোগোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ পরিবর্তনের ফলে প্রায় দুই দশক ধরে ব্যবহৃত পালতোলা নৌকা প্রতীকটি এবার বাদ দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তিত লোগোতে যুক্ত করা হয়েছে দেশের জাতীয় ঐতিহ্য ও কৃষিভিত্তিক সংস্কৃতিকে তুলে ধরা কয়েকটি নতুন উপাদান।
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (লজিস্টিকস) নাছিমা বেগম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। নতুন লোগোটিতে স্থান পেয়েছে জাতীয় ফুল শাপলা, ধান ও গমের শীষ এবং পাটপাতা। এর মধ্যে পাটপাতার ওপরে উজ্জ্বলভাবে লেখা রয়েছে “পুলিশ” শব্দটি, যা লোগোর কেন্দ্রীয় অবস্থানে দৃশ্যমান থাকবে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রজ্ঞাপন জারির পরই দেশের সব জেলা ও ইউনিটে নতুন লোগোর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। পুলিশ ইউনিফর্ম, অফিসের পতাকা, সাইনবোর্ড, যানবাহন, ছাপানো কাগজপত্র ও সকল সরকারি/আধা-সরকারি যোগাযোগ মাধ্যমেও নতুন লোগোর ব্যবহার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোকে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লোগো পরিবর্তনের সিদ্ধান্তটি একদিনে আসেনি। এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের ভাবনা ও সময়ের দাবি। এর আগে ২০০৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো পুলিশের মনোগ্রামে পরিবর্তন আনা হয়। এরপর ২০০৯ সালে সেই মনোগ্রামে আবার পরিবর্তন এনে বর্তমান লোগো নির্ধারণ করা হয়। সেই লোগোতে ছিল পালতোলা একটি নৌকা, তার দুই পাশে ধান ও গমের শীষের মালা, মাঝখানে একটি শাপলা এবং নিচে বাংলায় ‘পুলিশ’ লেখা।
নতুন লোগোতে নৌকার জায়গায় কেন অন্য প্রতীক বসানো হলো, সে বিষয়ে সরকারিভাবে বিস্তারিত কিছু না জানানো হলেও ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান সময়ে নিরপেক্ষতা, রাষ্ট্রীয় প্রতীকগুলোর ব্যবহার এবং জনগণের মাঝে বাহিনীর সর্বজনীনতা তুলে ধরার প্রয়োজনে এমন পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পালতোলা নৌকা একটি রাজনৈতিক প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হওয়ায় এর উপস্থিতি নিয়ে কখনো কখনো প্রশ্ন উঠত। তাই নতুন লোগোকে দেখা হচ্ছে পুলিশ বাহিনীর রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্বের প্রতিচ্ছবি হিসেবেও।
এটি শুধু বাহিনীর একটি লোগো পরিবর্তন নয়—বরং এটি পুলিশের ভাবমূর্তিতে একটি বড় রূপান্তরের ইঙ্গিতও বহন করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ