
ছবি: সংগৃহীত
দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার খুব শিগগিরই একটি নতুন ও কার্যকর জ্বালানি নীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। বিদ্যমান গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করে এই নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান নিশ্চিত করতে চায় সরকার।
‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত চারদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত এই সম্মেলনে ৪২টি দেশের ৪২৫ জন বিদেশি বিনিয়োগকারীসহ দেশীয় ২ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেছেন। এতে অংশগ্রহণকারী বিনিয়োগকারীরা সরাসরি গ্যাস, বিদ্যুৎ, জমি ও ব্যাংক ঋণের জটিলতা, উচ্চ সুদের হার, দুর্নীতি এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান, এসব সমস্যা সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং নতুন জ্বালানি নীতির মাধ্যমে বিদ্যমান বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা দূর করা হবে। তিনি বলেন, “উদ্যোক্তাদের আশ্বস্ত করতে চাই—সরকার বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সমস্যা আছে, কিন্তু আমরা জানি কীভাবে সমাধান করতে হয়।”
বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ দূর করতে বিডা ২০টি প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করেছে এবং সেগুলোর সমাধানে চলতি বছরেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হবে।
সম্মেলনের বিভিন্ন সেশনে বলা হয়, বাংলাদেশে ১১ কোটির বেশি কর্মক্ষম জনশক্তি রয়েছে, যার মধ্যে ৩ কোটির বয়স ২৫ বছরের নিচে। এশিয়ার উদীয়মান বাজার হিসেবে বাংলাদেশ কেবল একটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি দক্ষিণ এশিয়ার একটি সম্ভাবনাময় প্রবেশপথ। এখান থেকে ভারত, নেপাল, ভুটানসহ ৩০ কোটিরও বেশি মানুষের বাজারে প্রবেশ করা সম্ভব।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে আশিক মাহমুদ বলেন, “হ্যাঁ, বাংলাদেশে ঝুঁকি আছে, তবে রিটার্নও অনেক বেশি। তার প্রমাণ হলো—গ্রামীণফোন, লাফার্জ হোলসিম ও মারিকোর মতো কোম্পানিগুলোর মুনাফা এখানকার গড় আন্তর্জাতিক মুনাফার দ্বিগুণেরও বেশি।”
বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট বিষয়ে তিনি জানান, “সরকার জানে জ্বালানি খাত নিয়ে উদ্যোক্তাদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। শিগগিরই এমন একটি নীতি আসবে, যাতে এই খাতের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিশ্চিত হবে।”
বাংলাবার্তা/এমএইচ