
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিককে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রোববার (১৩ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাকে সরানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
মাত্র সাত মাস আগে, ২০২৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর তাকে ডিবিপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তখন প্রায় এক মাস ফাঁকা থাকা পদে এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রশাসনে একটি সক্রিয় রদবদল পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের অল্প সময়ের মধ্যেই বিভিন্ন বিতর্ক এবং আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন রেজাউল করিম মল্লিক।
সম্প্রতি সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটি ছিল মডেল ও ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’ বিজয়ী মেঘনা আলমকে গ্রেফতার ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক। ৭ এপ্রিল, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মেঘনাকে তার ঢাকার বাসা থেকে আটক করে। ১০ এপ্রিল রাতে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত তাকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেন।
এই গ্রেফতার অভিযান এবং পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। ডিবি’র ভূমিকা ও উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। বিশেষ করে, মেঘনার গ্রেফতারের ঘটনাকে ‘অপহরণ’ বলে উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রতিবাদ হয়।
এর প্রেক্ষিতে ১১ এপ্রিল ডিএমপি একটি ব্যাখ্যা প্রকাশ করে। সেখানে দাবি করা হয়, “রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্ক মিথ্যাচার ছড়ানো, আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক অবনতি ঘটানোর ষড়যন্ত্র এবং দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধনের চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন মেঘনা আলম।” ডিএমপি জানায়, তাকে আইন অনুসরণ করেই নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং আইনি সহায়তা চাওয়ার অধিকার তার রয়েছে।
তবে পুলিশের এই ব্যাখ্যায় জনমনে তেমন আশ্বাস আসেনি বলে মনে করেন অনেক পর্যবেক্ষক। বরং এটিকে ‘জনগণের প্রতিক্রিয়া মোকাবেলায় একতরফা প্রতিরক্ষা’ বলেই দেখছেন অনেকে। এরই মধ্যে ডিবিপ্রধান হিসেবে থাকা রেজাউল করিম মল্লিককে সরিয়ে দেওয়াকে অনেকেই প্রশাসনিকভাবে ‘দায় চাপানোর উদ্যোগ’ হিসেবে দেখছেন।
রেজাউল করিম মল্লিক ১৭তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের কর্মকর্তা। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন তিনি। এর আগে তিনি সিআইডিসহ পুলিশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ