
ছবি: সংগৃহীত
দক্ষিণ এশিয়ার ভৌগোলিক প্রতিবেশী চার দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও পরিবহন সংযোগ বাড়াতে অবশেষে চূড়ান্ত হলো বিবিআইএন মোটর ভেহিকেল অ্যাগ্রিমেন্টের (বিবিআইএন-এমভিএ) প্রটোকল। এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে আন্তঃদেশীয় সড়কপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে দীর্ঘদিনের জটিলতা দূর হবে এবং নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই প্রটোকলের আওতায় বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল—এই তিন দেশ তাদের ভূখণ্ডে সকল ধরনের যান চলাচলের অনুমতি দেবে। যদিও ভুটান এখনো ট্রায়াল রানে অংশ নেয়নি, তবুও তারা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ও নীতিগতভাবে সম্মত আছে।
প্রটোকলে যে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে পারমিট পদ্ধতি, কাস্টমস ও বর্ডার ক্লিয়ারেন্স, গাড়ির স্পেসিফিকেশন, বিমা, ক্রুদের পরিচয়পত্র, ট্র্যাকিং সিস্টেম, অনাকাঙ্ক্ষিত যাত্রা স্থগিত পরিস্থিতি, পরিবহন ব্যয় ও সীমানা পেরোনোর প্রক্রিয়া ইত্যাদি। পাশাপাশি নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য চুক্তিতে ইলেকট্রনিক গেটওয়ে প্ল্যাটফর্ম স্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নেপাল এই প্রটোকল থেকে উল্লেখযোগ্য সুবিধা পাবে, কারণ তারা সরাসরি ভারতের চারটি বন্দর—কলকাতা, হলদিয়া, বিশাখাপত্তনম ও মুন্দ্রা—ব্যবহার করতে পারবে। ফলে নেপালের রপ্তানি প্রবাহ আরও সহজ হবে। তবে নেপালের বেসরকারি পরিবহন খাত কিছুটা উদ্বেগে আছে, কারণ তারা ভারতের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ADB তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নেপালে উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ এবং সীমান্ত অবকাঠামোর দুর্বলতার কারণে এই উদ্যোগে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকবে। তাছাড়া চালক ও ক্রুদের ভারতে রুট চালানোর অনভিজ্ঞতা এবং সীমান্তে প্রয়োজনীয় টেস্টিং ল্যাবের অভাবও বাস্তবায়নে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
যদিও ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশকে দেওয়া কিছু ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে, তবুও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমভিএ বাস্তবায়িত হলে এই প্রতিবন্ধকতা অনেকটাই অতিক্রম করা যাবে। কারণ এতে নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন, প্রতিষ্ঠান ও যৌথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও নিরবচ্ছিন্ন যাত্রা নিশ্চিত করা যাবে।
এই প্রটোকল বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণ এশিয়ার অভ্যন্তরীণ বাজার প্রসারিত হবে এবং অঞ্চলজুড়ে অর্থনৈতিক কর্মসংস্থান, পণ্য ও সেবার আদান-প্রদান আরও গতিশীল হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ