
ছবি: সংগৃহীত
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আবারও স্বর্ণ চোরাচালানের অভিনব কৌশল ভেসে উঠেছে। এবার এক যাত্রীর লাগেজে থাকা ঘাস কাটার যন্ত্রের ভেতর থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে লুকানো অবস্থায় প্রায় দেড় কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করেছে বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। আটক করা হয়েছে ওই যাত্রীকেও।
ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার, ১৪ এপ্রিল, সকালবেলা। মালয়েশিয়া থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে ঢাকায় পৌঁছানো এক যাত্রী, যিনি দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম, শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণের পর ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষ করে গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার চেষ্টা করেন।
তবে সন্দেহ হলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তার লাগেজ তল্লাশি করে। প্রাথমিকভাবে কিছু না পেলেও, স্ক্যানিংয়ে ব্যতিক্রম কিছু একটা ধরা পড়ে। এরপর লাগেজের ভেতরে থাকা একটি ঘাস কাটার যন্ত্র খুলে দেখা হয় এবং তাতেই পাওয়া যায় কৌশলে লুকানো বিশুদ্ধ স্বর্ণের পিণ্ড।
কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার সুমন দাশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলাবার্তাকে জানান, উদ্ধারকৃত স্বর্ণ ২৪ ক্যারেটের এবং এর মোট ওজন ১ কেজি ৪৯৭ গ্রাম। আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
তিনি আরও জানান, ঘাস কাটার যন্ত্রের ভেতরে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তৈরি করা বিশেষ চেম্বারে এই স্বর্ণ লুকানো হয়েছিল। এতে বোঝা যাচ্ছে, পেশাদার ও পরিকল্পিতভাবে এই চোরাচালানের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে কাস্টমস কর্মকর্তাদের তৎপরতায় এই অপচেষ্টা ভেস্তে যায়।
শহিদুল ইসলামকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর কাস্টমস আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।
বিষয়টি এখন তদন্তাধীন রয়েছে এবং এই ঘটনার সঙ্গে কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সহায়তায় আরও অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে বিমানবন্দর দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালানের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। কাস্টমস ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বারবার সতর্কতা বাড়ানোর কথা বললেও চোরাকারবারিরা নতুন নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছে। এর আগে টেলিভিশনের ভেতর, জুতোর সোলের নিচে, বা নানা ধরনের যন্ত্রাংশে স্বর্ণ লুকিয়ে আনার ঘটনা ঘটেছে।
বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কড়া নজরদারি থাকা সত্ত্বেও একের পর এক এমন চেষ্টার পুনরাবৃত্তি শুল্ক গোয়েন্দা ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর জন্য নতুন করে চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যারা এমন অপরাধে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে। আটক শহিদুলের ব্যাপারে তদন্তের অগ্রগতির ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ