
ছবি: সংগৃহীত
বাংলা নববর্ষের প্রথম সন্ধ্যায় ঢাকার আকাশে উঠে এলো এক ব্যতিক্রমী শিল্পভাষা। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম এবং সর্ববৃহৎ ড্রোন শো, যা শুধু প্রযুক্তিনির্ভর এক প্রদর্শনী ছিল না—বরং বর্তমান সময়ের প্রতিরোধ, আশা, মানবতা ও জাতীয় আত্মপরিচয়ের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।
‘নতুন বছর, নতুন বাংলাদেশ’ থিমে সাজানো এই ড্রোন শোতে প্রযুক্তির আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে আকাশজুড়ে ফুটে উঠল প্রতীকী নানা চিত্র: ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বুলেটের সামনে দাঁড়ানো আবু সাঈদের প্রতিকৃতি, পানির বোতল হাতে মুগ্ধর দৃশ্য, ২০২৪-এর সাহসী তরুণদের আত্মত্যাগের স্মরণ, খাঁচা ভাঙা পায়রা এবং ফিলিস্তিনের জন্য প্রার্থনার নিদর্শন।
এই শো যেন একসাথে ফিরিয়ে আনল ইতিহাসের গর্ব, বর্তমানের যন্ত্রণা আর ভবিষ্যতের প্রত্যয়। জনতার প্রতি এক গভীর শ্রদ্ধা জানানো হল এই শৈল্পিক আয়োজনে, যেখানে আন্দোলনের ভাষা রূপ পেল আলো আর প্রযুক্তিতে।
ড্রোন শোটি আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, কারিগরি সহায়তা দেয় ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাস। এই আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণই প্রমাণ করে, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তির এই সমন্বয় বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসের পরিচায়ক।
শোয়ের সূচনায় যে চিত্রগুলো ফুটে উঠেছে, তা কেবল নান্দনিক নয়, বরং তা সময়ের নির্যাস হয়ে প্রতিফলিত হয়েছে: জুলাই আন্দোলনের প্রতিরোধ, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের দাবিতে ছাত্র-জনতার সাম্প্রতিক প্রতিবাদ, নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই এবং ফিলিস্তিন সংকটে বাংলাদেশের জনগণের সহমর্মিতা।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, এটি নিছক বিনোদনের আয়োজন নয়, বরং এই শো প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক ও মানবিক বার্তা দিচ্ছে—যেখানে দর্শকরা আন্দোলনের ইতিহাস এবং তার তাৎপর্যকে নতুন আলোয় দেখতে পাচ্ছেন।
এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন শুধু প্রযুক্তির নয়, বরং স্মৃতি, অনুভূতি ও আত্মজাগরণের এক অসাধারণ প্রকাশ হয়ে থাকবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ