
ছবি: সংগৃহীত
পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগদান শেষে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশ্বজুড়ে ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীসহ কোটি মানুষের প্রিয় এই ধর্মগুরুর শেষ বিদায়ে সম্মান জানাতে তিনি ভ্যাটিকান সিটিতে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিশ্বের বহু দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসও অংশগ্রহণ করেন, যা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিত্বও বয়ে এনেছে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টায় ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান অধ্যাপক ইউনূস। দীর্ঘ সফরের ক্লান্তি নিয়েও দেশপ্রেমের টানে নিজভূমিতে ফিরে আসেন তিনি। বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ও প্রটোকলের অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তার আগমন নিশ্চিত করেন। দেশের মাটিতে পা রাখার পর অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠজনেরা এবং কিছু গণমাধ্যমকর্মী দেখা করেন।
এর আগে বাংলাদেশ সময় রোববার দুপুর দেড়টার দিকে তিনি ইতালির রাজধানী রোমের লিওনার্দো দা ভিঞ্চি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (ফিউমিচিনো) থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সফরকালীন সময়ের বেশিরভাগ অংশ তিনি ভ্যাটিকানে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে আলোচনায় ও স্মৃতিচারণায় কাটান। পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল প্রতিশ্রুতির বার্তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরেন অধ্যাপক ইউনূস।
গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) ভ্যাটিকান সিটির বিখ্যাত সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। ভোর থেকে লাখো মানুষের ঢল নামে সেখানে। বিশ্ববাসীর হৃদয়ে সুগভীর ছাপ ফেলে যাওয়া পোপ ফ্রান্সিসের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনে যোগ দেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, বিশিষ্ট ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে অধ্যাপক ইউনূস এই সম্মানীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বিশ্বমঞ্চে দেশের উপস্থিতি দৃঢ় করেন।
সফরের শুরুতে অধ্যাপক ইউনূস গত শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) কাতারের রাজধানী দোহা থেকে রোমের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। দোহায় সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতির পর তিনি সরাসরি রোমে পৌঁছেন এবং সেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ও আলোচনায় অংশ নেন।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বের অন্যতম মানবিক উন্নয়ন চিন্তাবিদ ও ‘গ্রামীণ ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার জন্য ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। মানবিকতা, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক ব্যবসার অগ্রদূত হিসেবে তার ভূমিকা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সমাদৃত।
পোপ ফ্রান্সিসের মতো মহান মানবতাবাদী নেতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় তার অংশগ্রহণ তাই বাংলাদেশের জন্যও একটি মর্যাদাপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকলো।
বাংলাবার্তা/এমএইচ