ফাইল ছবি
বিএনপি সম্প্রতি রাষ্ট্র মেরামতের যে ২৭ দফার রূপরেখা প্রকাশ করেছে তাতে রূপরেখার ৫ম দফায় বলা হয়েছে, কোনো রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী দুইবারের বেশি পদে বহাল থাকতে পারবে না। এটি সংসদীয় গণতন্ত্র নীতির সঙ্গে কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ তা নিয়ে যেমন আলোচনা হতে পারে, পাশাপাশি রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখায় এই বিশেষ ধারাটি সংযোজন নিয়ে বিএনপির মধ্যে শুরু হয়েছে তোলপাড়।
একাধিক কারণে বিএনপির নেতারা এই রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখার তীব্র সমালোচনা করছেন। তারা এটিকে ১/১১ এর শক্তির পুনরুত্থান বলেও বিবেচনা করছেন। তৎকালীন বিএনপি মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া সংস্কার প্রস্তাবে এই দাবি উত্থাপন করলে বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। তখন রুহুল কবির রিজভী এটিকে উচ্ছিষ্টভোগীদের এক ধরনের কুৎসিত প্রস্তাব হিসেবে মন্তব্য করেছিলেন।
এখন আবার বিএনপি এ বিষয়টিকে কীভাবে ফিরিয়ে আনলো তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ২৭ দফার শুধু পঞ্চমটিই নয়, আরো আনেকগুলো দফা নিয়ে বিএনপির মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। যেমন, এই ২৭ দফার মধ্যে ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’-এরকম একটি বক্তব্য সন্নিবেশিত করা হয়েছে। যেটি বিএনপির ১৯ দফার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
বিএনপি রাজনৈতিক কৌশলপত্রে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, ইসলামিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে ধর্ম নিরপেক্ষতার নীতি থেকে বিএনপি কীভাবে সরে এলো তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেক নেতা।
কোনা কোনো নেতা বলছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি ড. কামাল হোসেনের খপ্পরে পড়েছিল এবং ড. কামাল হোসেন বিএনপিকে একটি লজ্জাজনক অবস্থায় দাঁড় করিয়েছিলেন। এবার সেই রকম কোনো নেপথ্যের গডফাদার আছে কিনা তা নিয়েও বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ এই ২৭ দফার অনেকগুলো বিএনপির রাজনীতির দর্শনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বিশেষ করে খালেদা জিয়া যখন কারান্তরীণ এবং অসুস্থ, সেই সময় কেউ দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না- এমন দফার মাধ্যমে বিএনপির রূপরেখা থেকে খালেদা জিয়াকেই বাদ দেওয়া হয়েছে।