সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন রুহুল কবির রিজভী (ছবি: বাংলাবার্তা)
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ ও আদালত একযোগে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘সরকারের সাথে আঁতাত করায় একই মামলায়, একই ধারায় জামিন মিলেছে শাহজাহান ওমরের। অথচ মহাসচিবসহ বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর জামিন মিলছে না। এটাতে প্রমাণ হয়- শেখ হাসিনার নির্দেশেই পুলিশ ও আদালত একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। এখনো বিএনপিসহ বিরোধী দলের লাখো নেতাকর্মী মানবেতর অবস্থায় পলাতক জীবন-যাপন করছেন। খেয়ে না খেয়ে আদালতের বারান্দায় ধর্ণা দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘গণভবন-বঙ্গভবনের কমান্ড সেন্টারের নির্দেশে দীর্ঘদিন ধরে বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, আব্দুস সালাম পিন্টু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, লায়ন আসলাম চৌধুরী, জহির উদ্দিন স্বপন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আমিনুল হক, শরিফুল আলম, কাজী আবুল বাশার, রফিকুল আলম মজনু, সাইফুল আলম নীরব, আবু সাঈদ চাঁদ, শেখ রবিউল আলম রবিকে আটক রাখা হয়েছে। বিএনপির এসব নেতা অসুস্থ হলেও উপযুক্ত চিকিৎসা না দিয়ে প্রাণনাশের ষড়যন্ত্র করছে। কারাগারে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্দি নেতাদের পরিবারের সদস্যরা গভীর উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে দিন যাপন করছে।’
রিজভী অভিযোগ করে আরও বলেন, রংপুর জেলাধীন গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারি মহিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম একটি মিথ্যা ও গায়েবী মামলায় গ্রেফতারের পর পুলিশি নির্যাতনে রংপুর জেলা কারাগারের ভেতরে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ও বিনা চিকিৎসায় গতকাল মৃত্যুবরণ করেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির সাথে জনগণও নেই, বহির্বিশ্বও নেই: শেখ পরশ
তিনি জানান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য ও বাঁশখালীর গন্ডামারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীকে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অপরদিকে লিয়াকত আলী চেয়ারম্যানের বাঁশখালীর গন্ডামারাস্থ গ্রামের বাড়িতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের লোকেরা যৌথভাবে হামলা চালিয়ে তার বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। তার পরিবারের সদস্যরা এখন গভীর আতঙ্কে দিন যাপন করছে।
রিজভী আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কতৃর্ক সারাদেশে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১১ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে ১টি, আসামি করা হয়েছে ৮৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে, আহত হয়েছেন তিনজন, নিহত হয়েছেন একজন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
বাংলাবার্তা/এসএ/এসকে