
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন, বিশেষ করে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রিত সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং শীর্ষ নেতারা। তারা ইফতার পার্টির মাধ্যমে নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন, যার মূল উদ্দেশ্য হলো ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করা। এই ষড়যন্ত্রে সংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশি চক্রগুলো সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, এবং একাধিক বৈঠকে তারা তাদের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে।
সূত্র অনুযায়ী, গত মধ্য রমজান থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে এই ষড়যন্ত্রের পক্ষে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের লক্ষ্য হলো, বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষের মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরী করা এবং অবশেষে সরকারকে উৎখাত করা। সম্প্রতি, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে ভারত এতে ক্ষুব্ধ হয়েছে। ভারত যদি বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক সিদ্ধান্তে প্রভাবিত হয়, তাহলে ইউনূস সরকারকে পতন ঘটানো কঠিন হবে, এমন আশঙ্কা তাদের।
এদিকে, পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর জানিয়েছেন, তারা কোন ধরনের নাশকতার আশঙ্কা করছেন না, তবে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
নিউটাউন প্লাজায় পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের আয়োজিত ইফতার পার্টিতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ অনেক শীর্ষ নেতা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তারা ড. ইউনূসের সরকারকে "অবৈধ" উল্লেখ করে তার সরকারকে উৎখাত করার জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া, অস্ত্র এবং অর্থসহ সব ধরনের সহযোগিতার মাধ্যমে এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে তাদের নির্দেশনা ছিল।
বিশেষ করে, আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, যিনি এই ষড়যন্ত্রের অন্যতম মূখ্য নেতা, তিনি কলকাতায় একাধিক বৈঠক আয়োজন করেছেন, যেখানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এসব বৈঠকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করার জন্য নতুন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়।
এদিকে, গত বছর ৫ আগস্ট ভারতের দিল্লিতে পালিয়ে গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, যিনি এখন সেখানে আশ্রিত। তার ছোট বোন শেখ রেহানা বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। সেসময় থেকে আওয়ামী লীগের অনেক নেতারাই দেশ ছেড়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন এবং তারা এখন পরস্পর যোগাযোগ রেখে ষড়যন্ত্রে জড়িত।
এছাড়া, ইফতার পার্টির পাশাপাশি অন্যান্য দেশে, যেমন যুক্তরাজ্য, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম এবং কানাডায়ও আওয়ামী লীগ নেতারা বৈঠক করছেন, যাতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনকে তীব্র করতে পারে।
এক্ষেত্রে, দেশি-বিদেশি চক্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম প্রতিহত করার জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে এবং দেশের নিরাপত্তা রক্ষা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ