
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বর্তমানে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ও সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চেয়ে সরকারকে চাপ দিতে অব্যাহত রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দলের আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ার পর, বিএনপি নিজেদের করণীয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর দলটি সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য চাপ দিতে এবং সারা দেশে গণজাগরণ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিএনপি, সরকারের কাছ থেকে 'নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ও সুস্পষ্ট রোডম্যাপ' না পাওয়ায় দলের নেতারা হতাশ। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, "আগামীকাল (আজ) আমাদের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক আছে। সে বৈঠকের পর আমরা দলের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোচনা করব।"
এছাড়া, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আমরা প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে শুরু থেকেই সমর্থন দিয়ে আসছি। কিন্তু সরকারের উচিত দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা এবং দেশের জনগণের ভোটের মাধ্যমে নতুন একটি নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করুক।”
এদিকে, একাধিক বিএনপি নেতার দাবি, তারা একটি অর্থবহ নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি করার জন্য প্রস্তুত। তাদের মতে, সুনির্দিষ্ট চার্টারের মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দল একমত হলে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। তবে তারা মনে করেন, নির্বাচনের সময় আগামী মার্চের পরে নির্ধারণ করা উচিত নয়। বিএনপি চাইছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, তবে যদি কিছুটা সময় স্লিপ হয় এবং জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হয়, তাও তারা সহ্য করতে প্রস্তুত।
এমন অবস্থায় বিএনপি, মিত্র দলসহ সারা দেশে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি দেবে। ইউনিয়ন, পৌরসভা থেকে উপজেলা, জেলা, মহানগর এবং কেন্দ্র পর্যন্ত সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণমিছিল ও গণঅবস্থানসহ নিয়মতান্ত্রিক নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। দলটি নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ চেয়ে সরকারের ওপর চাপ তৈরির পাশাপাশি এই কর্মসূচি আরও বৃদ্ধি করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি আসন্ন নির্বাচনের জন্য সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে এবং জনগণের সমর্থন অর্জন করতে চায়।
তবে, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার যদি তাদের চাওয়া পূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে। বিশেষ করে, ডিসেম্বরের পরে আর কোনোভাবে নির্বাচন মুলতবি হলে বিএনপি তা মেনে নেবে না, বলছেন দলের সিনিয়র নেতারা।
এদিকে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি জানিয়েছেন যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ভাবা হচ্ছে, তবে সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ এখনও ঘোষণা হয়নি। বিএনপি সরকারের কাছ থেকে এই বিষয়টি নিয়ে আরও স্পষ্টতা চেয়ে আসছে।
এভাবে আগামী দিনগুলোতে বিএনপি রাজনৈতিক মাঠে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং দেশব্যাপী জনসংযোগ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে, যাতে জনগণের সমর্থন পাওয়া যায় এবং তাদের দাবি পূরণের জন্য সরকারকে বাধ্য করা যায়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ