শীতার্তকে বস্ত্রদান। বাংলাবার্তা
শীতে কাঁপছে গোটা দেশ। শীতের তীব্রতায় জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। ফুটপাত ও গ্রামের অসহায় মানুষদের শীতে বেশি ধকল যাচ্ছে। তাই তো তীব্র শীতের এ সময়ে নিজ নিজ দায়িত্ববোধ, মানবতাবোধ থেকে এগিয়ে আসতে হবে আর্তমানবতার সেবায়। অন্তত ব্যক্তি উদ্যোগে হলেও প্রত্যেকে নিজের সাধ্যানুযায়ী শীতার্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
প্রত্যেকে যদি যার যার অবস্থান থেকে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ায়- তাহলে একজন শীতার্ত ব্যক্তিকেও কষ্ট করতে হবে না। ইসলামের ইতিহাসে দেখা যায়- সাহাবায়ে কেরাম অসহায়, দরিদ্রদের পাশে নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে দাঁড়িয়েছে। হিজরতের পরে আনসাররা মুহাজিরদের নিজেদের সম্পদের অর্ধেক সম্পদ দিয়ে দিয়েছে। এমনকি কারো একাধিক স্ত্রী থাকলে একজনকে তালাক দিয়ে মুহাজির ভাইদের সাথে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। কল্পনা করা যায়! আর আমরা বড়ই আত্মকেন্দ্রিক!
অসহায়, দরিদ্র, আর্তমানবতার সেবায় শীতবস্ত্র দান করা অত্যন্ত সাওয়াবের কাজ। অসহায়কে কাপড় দান করলে যতক্ষণ ওই কাপড়ের টুকরো তার কাছে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত দানকারী সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে আল্লাহর হেফাজতে থাকবে। নবিজী সা. বলেছেন, ‘কোনো মুসলমান অপর মুসলমানকে কাপড় দান করলে যতক্ষণ ওই কাপড়ের টুকরো তার কাছে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত দানকারী আল্লাহর হেফাজতে থাকবে।’ (জামে-তিরমিজি, হাদিস : ২৪৮৪)
ইসলাম সব সময় মানবতার কথা বলে। গুরুত্ব দেয় মানবীয় সকল সমস্যা সমাধানে। মানবতাবোধ, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও পরোপকার ইসলামের প্রাথমিক শিক্ষা। নবীজি সা. ইরশাদ করেন, ‘হিসাবের দিন মহান আল্লাহ বলবেন, হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলাম, কিন্তু তুমি আমাকে খাবার দাওনি। বান্দা বলবে, হে আমার রব! আপনি তো বিশ্বজগতের প্রতিপালক, কীভাবে আপনাকে আহার করাব? তিনি বলবেন, তুমি কি জানো না, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে খাবার চেয়েছিল, কিন্তু তুমি তাকে খাবার দাওনি। তুমি কি জানো না যে, তুমি যদি তাকে খাবার খাওয়াতে আজ তা পেতে? হে আদম সন্তান! তোমার কাছে আমি পানীয় চেয়েছিলাম, অথচ তুমি আমাকে পানীয় দাওনি। বান্দা বলবে, হে আমার প্রভু, আপনি সমগ্র জগতের প্রতিপালক, কিভাবে আপনাকে পান করাব? তিনি বলবেন, তোমার কাছে আমার অমুক বান্দা পানি চেয়েছিল, কিন্তু তাকে তুমি পান করাওনি। তাকে যদি পান করাতে, তবে নিশ্চয়ই আজ তা পেতে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৭২১)
আপনার একটুখানি সাহায্যে শীতের ধকল থেকে মুক্তি পাবে অসহায়, দরিদ্র পরিবার। তাই আসুন, এই হাঁড় কাঁপা শীতে আর্তমানবতার সাহায্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করি। লাঘব করি তাদের শীতের যাতনা। আল্লাহ তায়ালা ইহকাল ও পরকালে অবশ্যই সাহায্যের যথার্থ প্রতিদান দেবেন- ইনশাআল্লাহ।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ