
ছবি: বাংলাবার্তা
জীবন চলার পথে চড়াই-উৎরাই অনেক সময় পাড়ি দিতে হয়। কখনো ভালো সময় যায়। কখনো খারাপ সময়। আবার কখনো আর্থিক অনটনের ভিতর দিয়ে যায়। প্রয়োজন হয় ঋণ করার। আজকে আমরা জানবো যে দোয়া পাঠে পাহাড় পরিমাণ ঋণ পরিশোধ হয়।
আমাদের প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সেই ব্যক্তি উত্তম; যে উত্তমরূপে ঋণ পরিশোধ করে।’
আমাদের সমাজে অনেকে ঋণ নেয়ার সময় অনুনয় বিনয় করে । ঋণ নেয়ার পর ভুলে আদায়ের কথা। অথচ ঋণ পরিশোধ না করা কবিরা গুনাহ।
তবে কেউ যদি সত্যিকার অর্থেই ঋণ পরিশোধে অপারগ হয়, সে কী করবে? প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামাতা হজরত আলি (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘একজন চুক্তিবদ্ধ ক্রীতদাস তাঁর কাছে এসে বলে, আমার চুক্তির অর্থ পরিশোধ করতে আমি অপরাগ হয়ে পড়েছি। আমাকে আপনি সহযোগিতা করুন। তিনি বললেন, আমি তোমাকে কি এমন একটি বাক্য শিখিয়ে দেব না; যা আমাকে প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিখিয়েছেন? যদি তোমার উপর পাহাড় পরিমাণ ঋণও থাকে তবে আল্লাহ তাআলা তোমাকে তা পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেবেন। তিনি বললেন, তুমি বল,
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মাক-ফিনি বি-হালালিকা আন হারামিকা ওয়া-আগনিনি বিফাদ-লিকা আম্মান সিওয়াক।
অর্থ : ‘হে মহান আল্লাহ! আপনার হালালের মাধ্যমে আমাকে আপনার হারাম থেকে দূরে রাখেন এবং আপনার দয়ায় আপনি ছাড়া অন্য কারো মুখাপেক্ষী হওয়া থেকেও আমাকে আত্মনির্ভরশীল (ঋণমুক্ত) করুন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৬৩)
আরও পড়ুন : পৃথিবীর ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ নারীর বিয়ে কেমন ছিল?
আরও একটি দোয়া রয়েছে। যে দোয়া পাঠে ঋণ পরিশোধ সহজ হয়ে যায়। প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। তাকে বললেন, আবু উমামা! কী হয়েছে? সালাতের সময় ছাড়াও মসজিদে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে? আবু উমামা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! অনেক ঋণ এবং পেরেশানি আমাকে গ্রাস করে রেখেছে। তখন প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, আমি কি তোমাকে এমন কিছু কালিমা শিখিয়ে দেব? যেগুলো পড়লে মহান আল্লাহ তোমার চিন্তাকে দূর করে দেবেন এবং তোমার ঋণগুলো আদায় করে দেবেন। তিনি বলেন, জি হ্যাঁ! অবশ্যই বলুন, তখন প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নিম্নের দোয়াটি শিখিয়ে দেন এবং তা সকাল সন্ধ্যায় পড়তে বলেন। আবু উমামা বলেন, আমি প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ দোয়াটি পড়তে লাগলাম ফলে মহান আল্লাহ আমার ঋণগুলো পরিশোধের ব্যবস্থা্ করে দিলেন, পেরেশানিও দূর হয়ে গেল। দোয়াটি হলো-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ-উযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আ-ঊযু বিকা মিনাল ‘আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আ-ঊযু বিকা মিনাল-বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া আ-ঊযু বিকা মিন দ্দাই-নি ওয়া গালা-বাতির রিজাল।
অর্থ: হে মহান আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুঃশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮৯৩)
ঋণ পরিশোধ একান্ত ইচ্ছা ও প্রচেষ্টাসহ এ দোয়া পাঠ করলে মহান আল্লাহ অবশ্যই ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করবেন। মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে ঋণমুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাবার্তা/এআর/জেডএইচ