বাংলাবার্তা
ইসলাম মানুষের সাধ্যের বাইরে কোনো নির্দেশ দেয়নি। মানুষের সব বিষয়ে যথোপযুক্ত, মানানসই বিধান আরোপ করেছে। ইসলামে নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। প্রাপ্ত বয়স্ক প্রতিটি নারী-পুরুষের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ।
রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়িতে তাড়াহুড়ো করে জামাত ধরতে গিয়ে মসজিদের কাঁচের দরজায় ধাক্কা লেগে গ্লাস বিদ্ধ হয়ে মুনসেফ আলী নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার (২৭ জানুয়ারি) এশার নামাজের সময় উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের ফকিরা মোরা এলাকার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মুনসেফ আলী (২৬) ওই এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
স্থানীয় মুসুল্লিাদের তথ্য মতে জানা যায়, মসজিদে মাগরিবের নামাজ আদায় করতে যান মুনসেফ আলী। নামাজের প্রথম দুই রাকাত শেষ হয়ে যায়। এ কারণে শেষ রাকাতে জামাত আদায় করার জন্য তাড়াহুড়ো করে মসজিদে প্রবেশ করতে গিয়ে মসজিদের কাঁচের দরজার সাথে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে তার মাথা ও দেহের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জামাত ধরতে তাড়াহুড়ো সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?
ইসলামে জামাতের সাথে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব অত্যাধিক। জামাতের সাথে নামাজ আদায় করলে ২৭ গুণ বেশি সাওয়াব পাওয়া যায়। তা সত্ত্বেও জামাত ধরার জন্য দৌড়ে আসা উচিত নয়। বরং ধীরস্থিরভাবে আসবে। বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, `নামাজের ইকামত শুনলে তোমরা ধীর ও শান্তভাবে (মসজিদে বা জামাতে) যাও এবং তাড়াহুড়া করো না। অতঃপর ইমামের সঙ্গে নামাজের যতটুকু অংশ পাও ততটুকু পড়ে নাও এবং যেটুকু অংশ ছুটে যায় তা (একাকী) পূর্ণ করে নাও।' (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৩৬)
আমরা জানি, কেউ যখন দৌড়ে এসে নামাজে শরিক হয়, তখন হয়তো তাকবিরে উলা কিংবা এক/দুই রাকাত বেশি পাবে, কিন্তু তখন তো সে ধীরস্থীরভাবে নামাজ পড়তে পারবে না। বরং পুরো নামাজ জুড়েই তার মধ্যে অস্থিরতা কাজ করবে। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি এতটুকু জোরে হেঁটে আসে, যাতে সে ক্লান্ত ও অস্থিরচিত্ত হয়ে না পড়ে, তাহলে কোনো সমস্যা নেই।
আরও পড়ুন : জিনরা যেভাবে তৈরি করেছিল মসজিদে আল-আকসা
মুসুল্লিদের আরেকটি ভুল আমল হচ্ছে, কেউ রুকু না পেলে জামাতে শরিক না হয়ে এমনিই দাঁড়িয়ে থাকেন। ইমাম যখন সেজদা শেষ করে পরবর্তী রাকাতের জন্য দাঁড়ান বা তাশাহুদে বসেন তখন তিনি নামাজে শরিক হন। এ পদ্ধতিটি সঠিক নয়। প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ হচ্ছে- ‘তোমরা ইমামকে যে অবস্থায় পাও নামাজে শরিক হয়ে যাও, আর যতটুকু ছুটে গেছে তা জামাত শেষে আদায় কর।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৩৬)
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ