ছবি : বাংলাবার্তা
বিয়ে মানুষের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান। বিয়ের মাধ্যমে মানুষের বংশের বিস্তার হয়। মানুষের চরিত্র পবিত্র ও নিষ্কলুষ রাখার মাধ্যম বিয়ে। মহান আল্লাহ নারী-পুরুষের মধ্যে বিয়ের বিধান দিয়েছেন বিশেষ উদ্দেশে।
নারী-পুরুষের মাঝে বৈবাহিক বন্ধনের ভিত্তিতে জান্নাতের পথ সুগম হয়। বিয়ের মাধ্যমে লজ্জাস্থানের হেফাজত হয়। এতে জান্নাতে যাওয়া সহজ হয়। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমাকে তার দুই ঠোঁটের মাঝখান (জিহ্বা) ও দুই রানের মাঝখান (লজ্জাস্থান) নিরাপদ রাখার বিষয়ে গ্যারান্টি দেবে, আমি তার জন্য জান্নাতের গ্যারান্টি দিচ্ছি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৪)
মানব জীবনে বিয়ে শুধু শারীরিক চাহিদা বা ঈমাণ পূর্ণ করে তাই নয়, পুরুষের ব্যক্তিত্বেরও বিকাশ ঘটায়। সমাজে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে। এজন্য সময়মতো বিয়ে করাকে গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। ইসলামি শরিয়তে পুরুষের স্বাবলম্বী ও সক্ষমতার বিভিন্নতার সাপেক্ষে বিয়েকে কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
ওয়াজিব বিয়ে : যখন পুরুষের শারীরিক চাহিদা থাকে এবং এই পরিমাণ সামর্থ্য থাকে যে তার এবং স্ত্রীর প্রতিদিনের খরচ বহন করতে পারবে, তখন বিয়ে করা ওয়াজিব। এ অবস্থায় বিয়ে থেকে বিরত থাকলে গুনাহগার হবে।
ফরজ বিয়ে : যখন পুরুষের সামর্থ্য থাকার সাথে সাথে চাহিদা এতো বেশি থাকে যে, বিয়ে না করলে হারাম কাজে লিপ্ত হওয়ার আশংকা করে- তখন বিয়ে করা ফরজ। কেননা নিজেকে হারাম থেকে রক্ষা করা ও নিষ্কলুষ রাখা ফরজ। আর এটি বিয়ের মাধ্যম ছাড়া সম্পন্ন হবে না। কুরতুবী (রহ.) বলেন, যে সক্ষম ব্যক্তি অবিবাহিত থাকলে নিজের উপর ও নিজের দ্বীনদারির ক্ষতির আশংকা করে এবং এই ক্ষতি বিয়ের মাধ্যম ছাড়া দূরীভূত না হয়- এমন ব্যক্তির জন্য বিয়ে করা ফরজ; এতে কোনো মতভেদ নেই।
সুন্নত বিয়ে : যখন পুরুষের শারীরিক চাহিদা প্রবল না থাকে, কিন্তু স্ত্রীর অধিকার আদায়ের সামর্থ্য রাখে তখন বিয়ে করা সুন্নত। এ অবস্থায় খারাপ কাজের প্রতি ঝোঁকার আশঙ্কা না থাকলে বিয়ে না করলে কোনো অসুবিধা নেই।
নিষিদ্ধ বিয়ে : যখন পুরুষের আশঙ্কা হয় সে স্ত্রীর অধিকার আদায় করতে পারবে না। দৈহিক হোক বা আর্থিক। তার জন্য বিয়ে করা নিষিদ্ধ সামর্থ্য না থাকলে।
আরও পড়ুন : ইজতেমায় মারা গেলেন ১৯ মুসল্লি
রোজা রাখা : অনেকের বিয়ের ইচ্ছে আছে, সক্ষম পুরুষও কিন্তু স্ত্রীকে ভরণ পোষণ দেয়ার ক্ষমতা নেই। এ অবস্থায় বিয়ে না করে রোজা রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে হাদিসে। কারণ রোজা শারীরিক উত্তেজনা দূর করে দেয়। এ সময় সক্ষমতা অর্জনের জন্য বেশি বেশি কাজ ও মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে হবে।
বর্তমানে আমাদের সমাজের পরিস্থিতি ভয়াবহ। অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। নানারকম পাপাচার ও পাপের প্ররোচনাগুলো এ যামানায় বিয়ের ফরযিয়ত পূর্ববর্তী যে কোন যুগের চেয়ে আরও বেশি প্রবল। মহান আল্লাহ আমাদের মাঝে ও হারামের মাঝে দূরত্ব তৈরী করে দেন। আমাদেরকে উত্তম চরিত্র ও নিষ্কলুষতা দান করেন। আমিন।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ