ছবি : বাংলাবার্তা
মসজিদ আল্লাহর ঘর। মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করা প্রত্যেক মুসল্লির দায়িত্ব। দুনিয়ার মধ্যে শ্রেষ্ঠ স্থান মসজিদ। আর সর্বনিকৃষ্ট স্থান বাজার। দীনের দাওয়াত পৌঁছানোর লক্ষ্যে অনেক সময় মসজিদে অবস্থান করার প্রয়োজন হয়। মসজিদে রাত্রিযাপন অবস্থায় গোসল ফরজ হলে কী করবে?
আমাদের সমাজে মসজিদে রাত্রিযাপন অবস্থায় গোসল ফরজ হলে অনেক ধরনের কথা প্রচলিত আছে, কেউ কেউ বলে, মসজিদে ঘুমানো অবস্থায় গোসল ফরয হলে কোনো একটি কাপড় মসজিদের ফ্লোরে বিছিয়ে বিছিয়ে তার উপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে মসজিদ থেকে বের হতে হবে। কেউ বলে, ঘুমানোর সময় সাথে মোজা রাখবে এবং গোসল ফরয হলে মোজা পরে মসজিদ থেকে বের হবে। তাদের ধারণা- এ অবস্থায় যেহেতু শরীর অপবিত্র থাকে তাই অপবিত্র শরীর মসজিদের ফ্লোরে লাগানো যাবে না। তাদের এ ধারণা সঠিক নয়। মসজিদে ঘুমানো অবস্থায় গোসল ফরজ হলে কোনো কিছু বিছিয়ে তার উপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে যেতে হবে না; স্বাভাবিকভাবে হেঁটে বের হতে পারবে। তবে মসজিদে যেন কোনো নাপাকী না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখবে এবং জাগ্রত হওয়ার পর মসজিদে অপেক্ষা করবে না; বরং দ্রুত মসজিদ থেকে বের হয়ে পবিত্র হবে। ইবনে আবি নাজীহ রাহ. বলেন, আমি মসজিদে হারামে ঘুমালাম। আমার স্বপ্নদোষ হল। তখন আমি সাঈদ ইবনে জুবায়ের (রাহ.) কে জানালে তিনি বললেন, যাও, গোসল করে নাও। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা ৪৯২৩)
মসজিদে রাত্রিযাপন অবস্থায় গোসল ফরজ হলে যেন কোনো নাপাকী না লাগে সেদিকে তো অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। তবে গোসল ফরজ হওয়ার কারণে মসজিদের মেঝের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে পারবে না- এটি নিছক একটি ভুল ধারণা। পায়ে নাপাকী লেগে না থাকলে হেঁটে যেতে সমস্যার কিছু নেই। একবার প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মসজিদে ইতিকাফ অবস্থায়) আয়েশা (রা.) কে বললেন, ‘খুমরা’টা (ছোট জায়নামায বিশেষ) দাও। তখন তিনি বললেন, আমি তো হায়েজ অবস্থায় আছি। (অর্থাৎ আমি তো অপবিত্র; এ অবস্থায় কীভাবে এটা দিব?)। একথা শুনে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হায়েজের নাপাকী তো তোমার হাতে লেগে নেই! (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৯৮)
যেভাবে ফরজ গোসল করবে
গোসলের ফরজ ৩টি। গোসল আরবি শব্দ। আরবি গোসল শব্দের অর্থ হচ্ছে পুরো শরীর ধোয়া। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় পবিত্রতা ও আল্লাহর নৈকট্য পাওয়ার উদ্দেশ্যে পবিত্র পানি দ্বারা পুরো শরীর ধোয়াকে গোসল বলা হয়।
গোসলের ফরজ ৩টি
গোসলে যথাযথভাবে ৩টি কাজ আদায় না করলে গোসলের ফরজ আদায় হবে না। তিনটি হলো,
এক. কুলি করা ।
দুই. নাকে পানি দেওয়া।
তিন. সারা শরীর পানি দিয়ে এমনভাবে ধোয়া যাতে শরীরের চুল পরিমাণ জায়গাও শুকনো না থাকে। (আবু দাউদ)
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের বিধান অনুযায়ী চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ