ছবি : বাংলাবার্তা
আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে আলমি শুরার এবারের বিশ্ব ইজতেমা। মোনাজাত পরিচালনা করেন তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা জুবায়ের আহমদ। আখেরি মোনাজাতে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর হেদায়েত, ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহকাল ও পরকালের মুক্তি এবং দ্বীনের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য দোয়া করেন।
আলমি শুরার ইজতেমার ময়দানে আম বয়ান ও খাস বয়ান থেকে তাবলীগের সাথীরা নিজেদের জীবন চলার পাথেয় পেয়েছেন। এবারের ইজতেমার ময়দানে বয়ানের শিক্ষণীয় ৭ উক্তি উল্লেখ করা হলো।
এক. জ্ঞান মূর্খতা দূর করে। আর মহান আল্লাহর জিকির গাফিলতি (অলসতা, উদাসীনতা) দূর করে। মানুষের আচরণ ও আমলগুলো তার জ্ঞান অনুযায়ী হয়। সঠিক জ্ঞান অর্জন করলে সুন্দর আচরণ ও ভালো আমল বের হবে। তাই প্রতিনিয়ত সঠিক জ্ঞান অর্জন করা চাই। আলেমদের অন্তর থেকে মহব্বত করা চাই।
দুই. হালাল রিজিক অর্জন সহজ। আর হারাম রিজিক হতাশার কারণ। যে ব্যক্তি হালাল রিজিকের ওপর স্থির ও সন্তুষ্ট থাকে, তার রিজিক সারা দুনিয়া থেকে সংগ্রহ করে তার সামনে সাধারণভাবে উপস্থাপন করা হয়। আর হারামে নিযুক্ত ব্যক্তির রিজিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেওয়া হয়, সে অস্থিরভাবে দিগ্বিদিক ছুটে ছুটে তা সংগ্রহ করে থাকে, এমনকি এভাবে তার মৃত্যুও চলে আসে।
তিন. মহান আল্লাহ যখন কারও ব্যাপারে জান্নাতের সিদ্ধান্ত নেন, তখন তার দুনিয়ার জীবন ‘হায়াতে তাইয়্যেবা’ দিয়ে বরকতময় করে দেন। আর মহান আল্লাহ যখন কারও ব্যাপারে জাহান্নামের সিদ্ধান্ত নেন, তাকে শত শত ঝামেলা ও অস্থিরতা দিয়ে তার দুনিয়া বরবাদ করে দেন।
চার. ইলম অর্জন ছাড়া আমলের গুরুত্ব নেই। দানা না ঢেলে ‘খালি চাক্কি’ ঘোরালে যেমন তার থেকে কোনো কিছু বের হয় না, বীজ বপন না করে শুধু বার বার হালচাষ করেও যেমন কোনো ফসল পাওয়া যায় না; তেমনিভাবে ইলম অর্জন ছাড়া একই কাজ বার বার করেও কোনো ফায়দা পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন : ইসলামে শবে মিরাজের নামাজ ও রোজার বিধান
পাঁচ. জান্নাতি মানুষের দুইটি বৈশিষ্ট্য। ১. আল্লাহর ভয়ে অন্তর নরম থাকা, ২. সুন্দর চরিত্র ও ভালো আচরণ করা।
ছয়. সফলতা একমাত্র মহান আল্লাহর আনুগত্য ও সন্তুষ্টি মধ্যে। কোনো পদ-পজিশনে নয়, টাকাপয়সা বা ধন-সম্পদের মধ্যেও নয়। যেমন, ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ফেরাউন ধ্বংস হয়ে গেছে, আর সারা দুনিয়ার বাদশাহী করেও হজরত সোলায়মান (আ.) সাফল্য পেয়েছেন। কারুন অঢেল সম্পদের মালিক হয়েও মাটিতে ডুবে গেছে, আর হজরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) বিশাল ধনী হয়েও সাফল্য পেয়েছেন।
সাত. জ্ঞানের চাহিদা কী? জ্ঞানের অন্যতম চাহিদা হলো, নিজেকে প্রদত্ত জ্ঞানের অনুসারী করা। নবীকেও এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘হে নবী! আপনার কাছে ওহির মাধ্যমে যে জ্ঞান দেওয়া হয়েছে, আপনি তার অনুসরণ করুন।’
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে উপর্যুক্ত উপদেশ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ