ছবি : বাংলাবার্তা
জান্নাতে যাওয়া প্রতিটি মুমিনের একান্ত চাওয়া। মেয়ে সন্তানের লালনপালন জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেয়ে সন্তানের লালনপালনের যে পরিমাণ ফজিলতের কথা বলেছেন, ছেলে সন্তান লালনপালনের ক্ষেত্রে সে পরিমাণ বলেননি।
বিখ্যাত সাহাবি হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘যে ব্যক্তির তিনটি কন্যা সন্তান বা তিনজন বোন আছে। আর সে তাদের সাথে উত্তম আচরণ করেছে তাদেরকে নিজের জন্য অসম্মানের কারণ মনে করেনি সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ১৯১২)
অন্য হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘যে ব্যক্তির তিনটি কন্যা সন্তান বা তিনজন বোন আছে অথবা দু’জন কন্যা সন্তান বা বোন আছে। সে তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করেছে এবং তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করেছে। তার জন্য রয়েছে জান্নাত।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ১৯১৬)
জান্নাতের সুসংবাদের এ কথা ছেলে সন্তানের বেলায় বলা হয়নি। বরং মেয়ে সন্তানের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে। এজন্য আমাদের উচিত মেয়ে সন্তানের লালনপালন সন্তুষ্টচিত্তে করা।
মেয়ে সন্তান জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায় হবে। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘যে ব্যক্তিকে মেয়ে সন্তান লালনপালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং সে ধৈর্যের সাথে তা সম্পাদন করেছে সেই মেয়ে সন্তান তার জন্য জাহান্নাম থেকে প্রতিবন্ধক হবে। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ১৯১৩)
মুমিনের কাঙ্ক্ষিত স্থান জান্নাতে প্রবেশ করার মাধ্যমও হল মেয়ে সন্তানের লালনপালন করা। আবার চির দুর্ভোগের স্থান জাহান্নাম থেকেও মুক্তি মিলবে মেয়ে সন্তানের উত্তমরূপে প্রতিপালন করার দ্বারা।
আরও পড়ুন : ‘আলেমদের অন্তর থেকে মহব্বত করা চাই’
মেয়ে সন্তানের লালনপালনকারী নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গী হবে। এর চেয়ে মহা সৌভাগ্য আর কী হতে পারে! বিখ্যাত সাহাবি হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘যে ব্যক্তি দুইজন মেয়ে সন্তানকে লালনপালন ও দেখাশুনা করল [বিয়ের সময় হলে ভাল পাত্রের কাছে বিয়ে দিল] সে এবং আমি জান্নাতে এরূপ একসাথে প্রবেশ করব যেরূপ এ দুটি আঙুল। তিনি নিজের দুই আঙুল মিলিয়ে দেখালেন।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ১৯১৪)
মেয়ে সন্তান লালনপালনের তিনটি ফজিলত সকল ফজিলতের সারমর্ম হল তিনটি জিনিস-
এক. মহান আল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন।
দুই. জান্নাত দান করবেন। যা নেয়ামত ও আরাম আয়েশের স্থান।
তিন. আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গী হওয়ার সৌভাগ্য দান করবেন। যা সফলতার সর্বোচ্চ চূড়া।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ তিনটি ফজিলত বর্ণনা করেছেন মেয়ে সন্তান লালনপালনকারীদের জন্য।
ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে, মেয়ে সন্তানের জন্মে অধিক আনন্দ প্রকাশ করা। মেয়ে সন্তান জন্মানোর কারণে নিজেকে ছোট মনে করা, একে অপমান ও অসম্মানের কারণ মনে করা কাফিদের পদ্ধতি। তাই মুসলমানের উচিত, মেয়ে সন্তানের জন্মের কারণে অধিক খুশি ও আনন্দ প্রকাশ করা। যেন কাফিরদের এ নিচু মানসিকতার প্রতিবাদ হয়।
শেষ কথা হচ্ছে মেয়ে সন্তানের মা-বাবা জান্নাতি। যখন মেয়ে সন্তানের মা-বাবা তাদের মেয়েদের হাদিসের শিক্ষা অনুযায়ী গড়ে তুলবে। নিজেরাও মহান আল্লাহর আদেশ-নিষেধ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবে। তখনই আশা করা যায় মহান আল্লাহ জান্নাত দান করবেন।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ