ছবি : বাংলাবার্তা
আদনানের ফারিহার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা দুজন কাউকে না জানিয়ে পূতপবিত্র হয়ে জায়নামাজে বসে আল্লাহ, মহানবী ও কুরআনকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করে। পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে মেনে নেয়নি। তাই পরবর্তীতে ফারিহার আরেক জায়গায় বিয়ে হয়ে যায়। এখন জানার বিষয় হচ্ছে, ফারিহার আদনানের সাথে বিয়ে কি সহিহ হয়েছিল? আর পরবর্তী বিয়ে কি অবৈধ হয়েছে?
উত্তর : ইসলামী শরীয়তে বিয়ে শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
এক. বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।
দুই. উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।
তিন. ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষি শুনতে হবে।
উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিয়ে শুদ্ধ হয় না। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে আদনান ফারিহার বিয়ে শুদ্ধ হয়নি। আর ফারিহার অন্য জায়গায় বিয়ে যদি শরিয়ত সম্মতভাবে হয়ে থাকে তাহলে তার বিয়ে সহিহ হয়েছে।
মহান আল্লাহ, মহানবী ও কুরআন সাক্ষি রেখে বিয়ে করার দ্বারা কোনো বিয়ে শুদ্ধ হয় না। আর মহানবীকে সাক্ষি রেখে বিয়ে করা একটি কুফরী কাজ। কারণ তখন নবীকে হাজির নাজির বিশ্বাস করতে হয়। নতুবা কিভাবে নবীকে সাক্ষি রাখবে? কারণ সাক্ষি হবার জন্য উপস্থিত থাকা ও ঈজাব, কবুল শুনা জরুরী।
আরও পড়ুন : পবিত্র শবে বরাত নির্ধারিত হয় যেভাবে
‘বিয়ে সহিহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন স্বাধীন পুরুষ সাক্ষি বা একজন স্বাধীন পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা ঈজাব (প্রস্তাবনা) ও কবুল বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়।’ (আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮)
ইদানীং অনেকে বিয়ে করতে চায় না। অথচ ইসলামে বৈরাগ্য নীতির কোনো স্থান নেই। ইসলামে সামর্থ্যবান ব্যক্তিকে বিয়ে করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিয়ে না করা ইসলামে নিষিদ্ধ বিষয়। বিয়ে প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের জন্য পোশাকস্বরূপ আর তোমরা তাদের জন্য পোশাকস্বরূপ।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৮৭)
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, আল্লাহ, মহানবী, কুরআন ও দু কাঁধের ফেরেশতাকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করা জায়েয নেই। এভাবে বিয়ে হবে না। জিনা হবে। বিয়ের জন্য দুজন সাক্ষি জরুরি। লুকোচুরি করে বিয়ে করবেন না। বিয়ের আগে অবৈধ প্রেম শয়তানের সৃষ্টি। মুসলিম যুবকের তারুণ্যকে ধ্বংস করার জন্য ইবলিসের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার অবৈধ প্রেম।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ