ছবি : বাংলাবার্তা
পৃথিবীতে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সবচেয়ে মধুর। দাম্পত্য জীবন মধুর ও ভালোবাসায় ভরে উঠে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের মানিয়ে নেয়ায়। ইদানীং পাত্রী নির্বাচন অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়েছে। যোগ্য পাত্রী পাওয়া সোনার হরিণ পাওয়ার মতো। তারপরেও বিয়ের জন্য পাত্রীর বেশ কিছু জিনিস লক্ষ্য রাখলে যোগ্য পাত্রী পাওয়া সহজ।
অত্যন্ত পরিতাপের সাথে বলতে হয় ইদানীং পাত্রপাত্রীর যোগ্যতা নির্ণয় করা হয় পুরুষের উপার্জন আর নারীর সৌন্দর্যের ওপর ভিত্তি করে। অথচ পুরুষের উপার্জন আর নারীর সৌন্দর্যের ওপর ভিত্তি করে বিয়ে কতটুকু ফলপ্রসু হয় আমরা সকলেই অবগত।
তাইতো প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমণীকে তার অর্থ, আভিজাত্য, রূপ-সৌন্দর্য ও দ্বীন-ধর্ম দেখে বিয়ে করা হয়। কিন্তু তুমি দ্বীনদারকে পেয়ে কৃতকার্য হও। তোমার হস্ত ধূলিধূসরিত হোক।’ (মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস : ৩০৮২)
প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের কৃতজ্ঞতা আদায়কারী অন্তর ও মহান আল্লাহর জিকিরকারী জিহবা হওয়া উচিৎ। আর এমন মুমিন স্ত্রী গ্রহণ করা উচিৎ; যে তার আখেরাতের কাজে সহায়তা করবে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৮৫৬)
আরও পড়ুন : খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারকের ছেলে ও স্ত্রীর ইসলাম গ্রহণ
বিয়ের একটি মহান উদ্দেশ্য হল সন্তান গ্রহণ । এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে স্ত্রী নির্বাচন বাঞ্ছনীয়। প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘অধিক প্রেমময়ী, অধিক সন্তানদাত্রী রমণী বিয়ে কর। কারণ, আমি তোমাদেরকে নিয়ে কিয়ামতে অন্যান্য উম্মতের সামনে (সংখ্যাধিক্যের ফলে) গর্ব করব।’ (মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস : ৩০৯১)
সাধারণত কয়েকটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য করে নারীদের বিয়ে করা হয়। প্রথমত সম্পদের কারণে। কোন নারী সম্পদশালী হলে তার জন্য সবাই বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়, যাতে তার সম্পদ দিয়ে নিজেও ধনী হতে পারে। দ্বিতীয় নারীর বংশমর্যাদার কারণে বিয়ে করা হয়। যেন শ্বশুরবাড়ি নিয়ে গর্ব করতে পারে। তৃতীয়তো নারীর রূপ সৌন্দর্য দেখে বিয়ে করা হয়। চতুর্থ তার ধর্মপরায়ণতা ও খোদাভীতি দেখে বিয়ে করা হয়।
পুরুষ যদি নারীর সৌন্দর্যের ওপর নির্ভর করে তাহলে এর থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না। যদি চাওয়াই দুর্বল হয় তবে জীবন কীভাবে উন্নত হবে। যদি শুধু রূপই দেখে তাহলে বাহ্যিক এ সৌন্দর্য কদিন থাকে? এটা মাত্র কয়েক বছরের জন্য। যৌবন রুপ সব সময় থাকে না। যার ভিত্তিই দুর্বলের উপর- তার পরবর্তী ধাপ অবশ্যই দুর্বল হবে।
অথচ ভালোচরিত্র ও দ্বীনদারিতা এমন এক জিনিস যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। তাই এ ভিত্তির উপর যে দাম্পত্য সম্পর্ক শুরু হবে তা দীর্ঘস্থায়ী, মজবুত ও আনন্দময় হবে। এজন্য ধর্মপরায়ণতা ও সৎচরিত্রের দিকে লক্ষ্য রেখে স্ত্রী নির্বাচন করতে হবে।
কারণ রূপবতী স্ত্রীকে স্বামী যখন দেখে তখন তার চোখ শীতল ও আকর্ষিত হয়, আর গুণবতী স্ত্রীকে স্বামী যখন দেখে তখন তার মন শীতল হয়। তাই চোখকে সাময়িক শীতল করার চেয়ে নিজের মনকে শান্ত ও শীতল করাই সবচেয়ে উত্তম। বিখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সম্পূর্ণ পৃথিবী সম্পদ। আর পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তম সম্পদ হচ্ছে সৎ চরিত্রবান নারী।’ (মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস : ৩০৮৩)
মহান আল্লাহ প্রতিটি যুবককে সঠিক জীবনসঙ্গী নির্ণয় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ