ছবি: বাংলাবার্তা
ভালোবাসা পবিত্র ও সুন্দর। ভালোবাসা এমনই হওয়া উচিত যা ইহকাল ও পরকালে ফলপ্রসূ হয়। নবীজি (সা.)-এর ভালোবাসা ইহকাল ও পরকালে লাভবান হওয়ার অনন্য মাধ্যম। তাই তো সাহাবায়ে কেরাম নবীজি (সা.)-এর ভালোবাসায় মাতোয়ারা থাকতেন। নবীজি (সা.)-এর ভালোবাসায় সবচেয়ে অগ্রগামী ছিলেন হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.)।
নবীজি (সা.)-এর প্রতি আবু বকর (রা.)-এর ভালোবাসা
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু বকর (রা.) ছিলেন প্রিয় নবীজির সবচেয়ে প্রিয় সাহাবি। তিনি সিদ্দিকে আকবর নামে পরিচিত। ইসলামের দাওয়াত পাওয়ার পর নবীজি (সা.)-এর নওবুয়ত সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করেননি। নবীজি (সা.) বলেন, আমি যাকেই ইসলামের দাওয়াত দিয়েছি, সবার মধ্যে কম-বেশি সংশয় দ্বিধা অবশ্যই দেখেছি। কিন্তু আবু বকরের মধ্যে কোনো প্রকার সংশয় দেখিনি, দাওয়াতের সাথে সাথে আবু বকর কলেমা পড়ে মুসলমান হয়ে গিয়েছে।
আবু বকর (রা.) ছিলেন প্রিয় নবীর প্রধান সাহাবি, ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। ইসলামের প্রথম খলিফা এবং প্রথম পুরুষ মুসলিমদের অন্যতম। প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে প্রথম ইসলাম গ্রহণের সম্মান আল্লাহ তাঁকেই দিয়েছেন। ইসলাম গ্রহণের পর থেকেই নবীর প্রতি নিবেদিত প্রাণ ছিলেন তিনি।
হিজরত, সফর এবং কাফেরদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জিহাদে অংশগ্রহণসহ নানা প্রতিকূলতায় নবীজির পাশে ছিলেন ঢাল হিসেবে। শত্রুবাহিনীর সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় তিনি ছিলেন বিচক্ষণ ও আপসহীন। বিশেষভাবে নবীজির ইন্তেকালের পর আরব দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে ধর্মত্যাগ ও রাসুলের প্রতি বিদ্বেষ এবং তাঁকে ব্যঙ্গ করে অবমাননার এক প্রবল ঝড় উত্থিত হয়েছিল। এই ঝড়ের ঝাপটায় দুর্বল ঈমানদার এবং নতুন ইসলাম গ্রহণকারীদের অন্তর থেকে ঈমানের আলো প্রায় নিভে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কঠিন সেই মুহূর্তে আবু বকর (রা.) অত্যন্ত দৃঢ়তা ও সীমাহীন ধৈর্যের সঙ্গে শত্রুবাহিনীর মোকাবেলায় অগ্রসর হয়েছিলেন। আর এসব কিছুই ছিল নবীর প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা এবং গভীর মহব্বতের বহিঃপ্রকাশ। মৃত্যুকালেও তাঁর এই ভালোবাসার ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল।
বর্ণিত আছে, ‘মৃত্যুশয্যায় তিনি আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন নবীজি কোন দিন ইন্তেকাল করেছেন? আয়েশা (রা.) জানালেন, সোমবার। তিনি বলেন, আজ কী বার? জবাব দিলেন, সোমবার। তখন তিনি বলেন, হায় যদি আমার মৃত্যু রাতের আগেই হতো! (বুখারি, হাদিস: ১৩৮৭)।
মহান আল্লাহ আমাদেরকেও নবীজি (সা.)-এর ভালোবাসা দান করুন। আমিন।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ