ছবি: বাংলাবার্তা
বর্তমানে উচ্চ আওয়াজে মাইক বাজানো একটি স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশসহ বাদ যায় না ওয়াজ-মাহফিলও। এভাবে উচ্চ আওয়াজে মাইক বাজানো সম্পর্কে ইসলাম যা বলে,
রাজনৈতিক সভা-সমাবেশসহ ওয়াজ-মাহফিলে মানুষের উপস্তিতি বেশি হলে সভাস্থলে মাইক ব্যবহার করতে কোনো বাধা নেই। তবে আমাদের দেশে ওয়াজ মাহফিল ও সভা-সমাবেশের নামে গভীর রাত পর্যন্ত যেভাবে চতুর্দিকে মাইক লাগিয়ে উঁচু আওয়াজে ওয়াজ ইত্যাদি প্রচার করা হয় তা শরিয়ত সম্মত নয়। আয়োজনকারীদের উচিত গভীর রাত পর্যন্ত ওয়াজ মাহফিল অব্যাহত না রাখা এবং অপ্রয়োজনীয় মাইক ব্যবহার বন্ধ করা উচিত।
মাইকের উচ্চ আওয়াজ আশপাশের বহু মানুষের আরাম ও ঘুম কেড়ে নেয়। অনেক ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত মানুষ, ঘুমন্ত ব্যক্তি, প্রতিবন্ধী, অসুস্থ, বৃদ্ধ, শিশু, গর্ভবতী নারী, বিভিন্ন প্রয়োজনের কারণে বাড়িতে অবস্থানকারী লোকজন, পরীক্ষার্থী, অধ্যয়নরত, গবেষক, নামাজ, দোয়া ও জিকিরে নিমগ্ন ব্যক্তিদের ঘুম ও কার্যক্রমে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি করে এবং অন্য ধর্মের মানুষেরও ঘুমের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়। আর শান্তির ধর্ম ইসলামে এভাবে মানুষকে কষ্ট দেওয়া অনুমোদিত নয়।
আরও পড়ুন : নবীজি (সা.)-এর উম্মতের প্রতি সীমাহীন ভালোবাসা
ওয়াজ মাহফিল তো পরের কথা বরং হাদিসে পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির নামাজ, কুরআন
তেলাওয়াত, দোয়া-তাসবিহ ইত্যাদি ইবাদতে যেন বিঘ্ন সৃষ্টি না হয় সে জন্য উচ্চ আওয়াজে কুরআন তেলাওয়াত করতে নিষেধ করা হয়েছে। বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে ইতিকাফ করছিলেন। এমন সময় তিনি শুনতে পেলেন, লোকেরা উঁচু স্বরে কুরআন তেলাওয়াত করছে। তখন তিনি পর্দার কাপড় সরিয়ে তাদের লক্ষ্য করে বললেন, ‘মনে রাখবে, তোমাদের সবাই তার পালনকর্তার সঙ্গে একান্ত নিভৃত আলাপচারিতায় নিমগ্ন রয়েছ। অতএব, তোমাদের একজন অপরজনকে কষ্ট দেবে না এবং তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে (অথবা তিনি বলেছেন : সালাতের ক্ষেত্রে) একজন অপরজনের ওপর আওয়াজ উঁচু করবে না।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৩২)
আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমদুল্লাহ বলেন, কোনো মানুষের কষ্টের কারণ হওয়া জায়েয নয়। অতএব সভা-সমাবেশ, ওয়াজ মাহফিল গভীর রাত পর্যন্ত দূর-দূরান্তে মাইক লাগিয়ে উচ্চ আওয়াজে মাইক বাজানো জায়েয নেই। আমাদের দেশে বিয়ের অনুষ্ঠান, জন্মদিনে ছাদে ব্রান্ড পার্টি, ডিজে পার্টির আয়োজন করে। এগুলো তো আরও জঘণ্য অপরাধ। মানুষের কষ্ট হয় এমন সব কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকতে হবে।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ